দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে দেশে কারিগরি শিক্ষার প্রসার বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে সাধারণ ধারার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভোকেশনাল কোর্স অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের (সেসিপ) আওতায় ৬৪০টি স্কুল ও মাদরাসায় ভোকেশনাল কোর্স অন্তুর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু কারিগরি বিষয়ের শিক্ষক হতে পর্যাপ্ত প্রার্থী পাওয়া যাচ্ছে না। তাই চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগের পরও বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বহু শিক্ষক পদ খালি থাকবে। অপরদিকে সেসিপের চাহিদার ভিত্তিতে বিভিন্ন স্কুল ও মাদরাসায় ভোকেশনাল কোর্সে ২৪৭ জন শিক্ষক নিয়োগে গণবিজ্ঞপ্তি জারি হলেও পর্যাপ্ত প্রার্থী আবেদনই করেননি।
কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কারিগরি বিষয়ে অর্থাৎ স্কুল পর্যায়-২ এ নিবন্ধিত প্রার্থীর সংখ্যা কম হওয়ায় এ সংকট। সেসিপের ২৪৭ কারিগরি শিক্ষক পদে নিয়োগ পেতে আবেদন করেছেন আড়াইশ’ প্রার্থী। যা পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা। তাই আবেদনের সময় বাড়ানো হয়েছে। আগামী ২০ জুলাই পর্যন্ত প্রার্থীদের আবেদনের সুযোগ দেয়া হয়েছে। এদিকে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে স্কুল পর্যায়-২ এর বিভিন্ন কারিগরি বিষয়ের জন্যও পর্যাপ্ত প্রার্থী পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে এনটিআরসিএর সচিব মো. ওবায়দুর রহমান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে স্কুল পর্যায়-২ এ পর্যাপ্ত সংখ্যক প্রার্থী নির্বাচন করা যায়নি। বহু কারিগরি শিক্ষক পদ শূন্য থাকবে। আবার সেসিপের নিয়োগে বিভিন্ন স্কুল মাদরাসায় কারিগরি বিষয়ের ট্রেড ইনসট্রাক্টর নিয়োগের জন্যও পর্যাপ্ত সংখ্যক প্রার্থী পাচ্ছি না। আবেদনের সংখ্যা খুবই কম। কারিগরি বিষয়ে (স্কুল পর্যায়-২) নিবন্ধিত প্রার্থীও কম।
এনটিআরসিএর সংশ্লিষ্ট শাখায় কর্মরত এক কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, সেসিপের আওতায় বিভিন্ন স্কুল ও মাদরাসায় ২৪৭ জন ট্রেড ইনসট্রাক্টর নিয়োগে গণবিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছিলো। ৩০ জুন পর্যন্ত সময় থাকলেও আবেদন পড়েছিলো খুব কম। তাই আবেদনের সময় বাড়ানো হয়েছে।
জানা গেছে, সেসিপের এ গণবিজ্ঞপ্তির আওতায় ১৯৮টি স্কুল ও মাদরাসায় সিভিল কনসট্রাকশন ট্রেডের ১১টি, কম্পিউটার ইনফরমেশন টেকনোলজি ট্রেডের ৯৭টি, ড্রেস মেকিং ট্রেডের ১৯টি, ফুড প্রোসেসিং ও প্রিজারভেশন ট্রেডের ১৯টি, জেনারেল ইলেক্ট্রিকাল ওয়ার্কস ট্রেডের ৫৬টি, জেনারেল ইলেকট্রনিকস ট্রেডের ১৭টি, জেনারেল মেকানিক্স ট্রেডের ৩টি, প্লাম্বিং ও পাইপ ফিটিংস ট্রেডের ৮টি, রেফ্রিজারেশন ও এয়ারকন্ডিশনিং ট্রেডের ১৬টি এবং ওয়েল্ডিং ও ফেব্রিকেশন ট্রেডের ১টি পদে ট্রেড ইনসট্রাক্টর বা শিক্ষক নিয়োগ সুপারিশ করা হবে।
এদিকে কারিগরি শিক্ষক হতে প্রার্থীদের আগ্রহ কম কেনো সে বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে কিছু বলতে পারছেন না কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, এসব বিষয়ে নিবন্ধিত হতেই কম সংখ্যক প্রার্থী পাওয়া যায়।
এ ছাড়া কারিগরি বিষয়ে দক্ষদের চাকরির বাজারে বেশি চাহিদা থাকায় তাদের মধ্যে বেসরকারি শিক্ষক হওয়ার প্রবণতা কম বলেও ধারণা সংশ্লিষ্টদের কারো কারো।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।