রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কিশলয় বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। রবীন্দ্রজয়ন্তী উদযাপনে গতকাল সোমবার কলেজে আলোচনা অনুষ্ঠান ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এ অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন প্রথম শ্রেণির ছাত্রী ফারিহা বিনতে মামুন, তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ফারিহা ও মারজান ইসলাম তাহারাত। অনুষ্ঠানে কবিগুরুর 'প্রশ্ন' কবিতা আবৃত্তি করে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী লামিয়া ইসলাম ফারিন এবং 'বীরপুরুষ' কবিতা আবৃত্তি করেন পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী জেমিমা হাসান রিয়াহীন। পরে 'আয় তবে সহচরী' গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে উম্মে সোবহানা রেজা তাহিয়া এবং 'মম চিত্তে নৃতে নৃত্যে' গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে সুমাইয়া ইসলাম অর্ভি।
শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উপস্থিতে বাংলা সাহিত্য জগতের পুরোধা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বর্ণাঢ্য জীবন নিয়ে তথ্যবহুল আলোচনা ছিল অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ।
নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী সহশিক্ষা কার্যক্রমে শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করতে এবং কিশোর শিক্ষার্থীদের মাঝে রবীন্দ্র ভাবনা, শিক্ষা ও চেতনা ছড়িয়ে দেবার লক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিলো। আলোচনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে অংশগ্রহণ করেন পঞ্চম শ্রেণির জেমিমা হাসান রিয়াহীন, চতুর্থ শ্রেণির দেবশ্রী বর্মন ও দেলফিয়া ঈশাল রহমান।
বাংলা বিষয়ের সিনিয়র প্রভাষক খন্দকার শারমিন আক্তার তার বক্তব্যে কবিগুরুর জীবনাদর্শনের দিকে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, বিশ্বকবির নোবেল বিজয়ের অর্থ কৃষকদের কল্যার্ণাথে ব্যয় করার মাধ্যমে তার মানবিক ভাবনার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। প্রকৃত বাঙালি হয়ে ওঠা এবং বাঙালি কৃষ্টি-কালচার লালন ও ধারণ করতে রবীন্দ্র চর্চার প্রতি গুরুত্বারোপ উঠে আসে তার আলোচনায়। তিনি আরো বলেন, এ উপমহাদেশের তিনটি দেশ (বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলংকায়) তার রচিত সংগীতকে জাতীয় সংগীতের মর্যাদা দেয়া মাধ্যমে তার মেধা, মনন ও দেশপ্রেমের অনুভূতিকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়ার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
রবীন্দ্রনাথ পাঁচটি মহাদেশের তেত্রিশটিরও বেশি দেশ ভ্রমণ করেছেন জানিয়ে শিক্ষার্থী দেলফিয়া ঈশাল রহমান কবির ভ্রমণপিপাসু মানসিকতা সম্পর্কে আলোচনা করে।
কবিগুরুর বিপুল সাহিত্য ভান্ডার নিয়ে আলোচনা উপস্থাপন করে শিক্ষার্থী জেমিমা হাসান বলেন, আড়াই হাজারের বেশি চিত্রকর্মের স্রষ্টা এই মহান পুরুষ। যাকে 'নাইট' উপাধিতে ভূষিত করে ব্রিটিশ সরকার।
শিক্ষার্থী দেবশ্রী বর্মন আলোচনা করেন রবীন্দ্রনাথ রচিত শিশু সাহিত্য নিয়ে। তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ ছিলেন একাধারে কবি, নাট্যকার, কথাশিল্পী, গীতিকার, সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক এবং ভাষাবিদ। তিনি 'গীতাঞ্জলি' কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
রবীঠাকুর রচিত কবিতার আবৃত্তি এবং রবীন্দ্র সঙ্গীতের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের নৃত্য পরিবেশনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।