দৈনিক শিক্ষাডটকম, বরিশাল : বরিশালের আগৈলঝাড়ায় এনজিওর কিস্তির টাকা দিতে না পারায় শিশুসন্তানসহ এক গৃহবধূকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতার অভিযানে কোনো নারী পুলিশ না নিয়ে যাওয়ায় গৃহবধূর শাশুড়িকেও থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। রাতভর তাঁকেও থানায় রাখা হয়। এ ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন গ্রেফতার হওয়া গৃহবধূর স্বজনেরা।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের তালতারমাঠ গ্রামের শ্যামল হালদারের স্ত্রী নূপুর মধু (২৬) কালুরপাড় এলাকার বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (বিডিএস) নামে একটি এনজিও থেকে ১ বছর আগে ৪০ হাজার টাকা ঋণ নেন। আর্থিক অনটনের কারণে নিয়মিত কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে পারেননি তিনি। সর্বশেষ তাঁর কাছে ১৭ হাজার টাকা পাওনা ছিল ওই এনজিওর। ঋণের টাকা খেলাপি হওয়ায় বিডিএস কর্তৃপক্ষ সমিতির সদস্য নূপুর মধুর নামে বরিশাল আদালতে মামলা করেন। ওই মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
ভুক্তভোগীর স্বজনেরা জানান,
নূপুর মধুকে গ্রেফতার জন্য আগৈলঝাড়া থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আমিরুল ইসলামের নেতৃত্বে শুক্রবার গভীর রাতে নারী পুলিশ ছাড়াই পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়। বাড়ি থেকেই নূপুর মধুকে গ্রেপ্তার করা হয়। আবার মামলার আসামি না হলেও তাঁর দুই বছরের ছেলে কৌশিক হালদার ও শাশুড়ি শ্রীমতি হালদারকে (৫৫) আটক করে থানায় নিয়ে যান পুলিশের এসআই আমিরুল ইসলাম।
এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া থানার এসআই আমিরুল ইসলাম বলেন, আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় নূপুর মধুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নারী পুলিশ নিয়ে না যাওয়ায় নূপুরের শাশুড়ি শ্রীমতি হালদারকে সঙ্গে নিয়ে আসা হয়। পরে গতকাল সকালে শ্রীমতি হালদারকে ছেড়ে দিয়ে নূপুর মধুকে সন্তানসহ আদালতে পাঠানো হয়েছে। শিশুটির বাবা ঢাকায় থাকায় তাকে মায়ের সঙ্গেই রাখা হয় বলে দাবি ওই পুলিশ কর্মকর্তার।
গৃহবধূর শাশুড়ি শ্রীমতি হালদার জানান, নূপুরের দুই বছরের সন্তান ছাড়া তিনি যাবেন না বলে জানান। তখন পুলিশ সন্তানসহ তাঁকে আদালতে পাঠায়।
বিডিএসের নির্বাহী পরিচালক এস এস এইচ কবির বলেন, ‘কিস্তি না দিলে তো মামলা হবেই। আসামি নারীকে সন্তানসহ কারাগারে পাঠানোর বিষয়ে আমি জানি না।’