কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ৮৬ তম সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন না মানায় পরিসংখ্যান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও বিভাগীয় প্ল্যানিং কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. দুলাল চন্দ্র নন্দীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
মঙ্গলবার ওই শিক্ষককে কারণ দর্শানোর বিষয়টি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল হক চৌধুরী। এর আগে গত ১০ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষরে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়।
ওই কারণ দর্শানোর নোটিশে বলা হয়, গত ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ৮৬তম সভায় শিক্ষকদের চাকুরি স্থায়ীর আবেদন বিভাগীয় প্ল্যানিং কমিটির মাধ্যমে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য বিভাগ সিন্ডিকেটের সেই সিদ্ধান্তের আলোকে শিক্ষকদের চাকরি স্থায়ীকরণের আবেদন বিভাগীয় প্ল্যানিং কমিটির মাধ্যমে পাঠিয়েছে। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সংশোধন আইন-২০১৩ এর ১০ (০৮) (খ) এ প্ল্যানিং কমিটি ‘শিক্ষক, অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগের সুপারিশ করবেন’ মর্মে উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও পরিসংখ্যান বিভাগের প্ল্যানিং কমিটি বিভাগের শিক্ষকদের ‘চাকুরি স্থায়ীর আবেদন প্ল্যানিং করার সুযোগ নেই’ বলে সিদ্ধান্ত নেয়, যা পরিসংখ্যান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও প্ল্যানিং কমিটির সভাপতি হিসেবে গত ২০ মার্চ পত্রের মাধ্যমে জানিয়েছেন। যেহেতু, সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অমান্য করা সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা পরিপন্থী যা সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা ২০১৮ এর ৩ (খ) মোতাবেক অসদাচরণ হিসেবে গণ্য।
এতে আরো উল্লেখ বলা হয়, সেকারণে আপনাকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা ২০১৮ এর ৩(খ) এর দায়ে অভিযুক্ত করে কেনো ওই বিধিমালার অধীনে যথোপযুক্ত দণ্ড দেয়া হবে না তা নোটিশ প্রাপ্তির কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হলো।
জানতে চাইলে পরিসংখ্যান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও বিভাগীয় প্লানিং কমিটির অধ্যাপক ড. দুলাল চন্দ্র নন্দী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ ধরনের চিঠিতে আমি মর্মাহত। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ছিলাম, সিন্ডিকেট মেম্বার ছিলাম, তিনবার বিভাগীয় সভাপতি। এই আইন ৩০ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৬ তম সিন্ডিকেটে পাস হয়েছে। আর আবেদন জানুয়ারির ৯ তারিখ। এখন যদি এই কারণে শোকজ করতে হয় তাহলে তো বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সব নিয়োগ আবার প্লানিং করে পাঠাতে হবে। এই বিষয়ে জানতে বিভাগীয় প্লানিং কমিটি রেজিস্ট্রারকে চার-পাঁচবার ফোন করেছিলাম। তিনি ফোন ধরেননি। বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি কিন্তু কোনো উত্তর আসেনি। তখন আমরা আইনে দেখলাম, বিভাগীয় প্লানিং কমিটি শুধুমাত্র নিয়োগ অর্থাৎ শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীর নিয়োগে সুপারিশ করবেন। এটা আমদের ধারণা ছিলো। কিন্তু এই বাখ্যা তো রেজিস্ট্রার দিতে পারতো। পরবর্তীতে সিন্ডিকেট ছিলো। সিন্ডিকেটের পর আমি ওনার কাছে আসলাম। ওনাকে জিজ্ঞাস করলাম তারিখের বিষয়ে। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের আগের বিষয় তো আমরা প্লানিং করে পাঠাতে পারি না।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আমিরুল হক চৌধুরী বলেন, সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের আগে পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে বিভাগীয় প্ল্যানিংয়ের সুপারিশ ছাড়া কিছু স্থায়ীকরণের আবেদন এসেছিলো। পরে সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের পর বিভাগীয় সুপারিশ নিয়ে পাঠাতে বললে অপারগতা প্রকাশ করেন। তখন ওনাকে শোকজ করা হয়। তবে এরপরের প্ল্যানিংগুলো নিয়ম মেনেই বিভাগ থেকে পেয়েছি।