কুবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ সেশনজটের আশঙ্কা

দৈনিক শিক্ষাডটকম, কুবি |

দৈনিক শিক্ষাডটকম, কুবি : উপাচার্য ও শিক্ষক সমিতির দ্বন্দ্বে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি)। বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে ১ মে থেকে বন্ধ রয়েছে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম।

এদিকে একাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিক করা নিয়ে উপাচার্যের আলোচনার চিঠি প্রত্যাখ্যান করেছে শিক্ষক সমিতি। একই সঙ্গে সিন্ডিকেটের গঠন করা দুটি কমিটির প্রতিও অনাস্থা জানিয়ে আন্দোলনের মাঠে রয়েছেন শিক্ষকেরা। ফলে খুব সহজেই এই সংকট দূর হবে বলে আশা করা যাচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে দীর্ঘ সেশনজটের আশঙ্কা করছেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সূত্রে জানা গেছে, কুবিতে একাডেমিক কার্যক্রম দ্রুত শুরু করার লক্ষ্যে উপাচার্য এ এফ এম আব্দুল মঈনের সঙ্গে আলোচনার আহ্বান জানিয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু তাহের ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসানকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেন রেজিস্ট্রার আমিরুল হক চৌধুরী। গত রোববার এই চিঠি দেওয়া হলেও গত মঙ্গলবার পর্যন্ত সেই আহ্বানে সাড়া দেয়নি শিক্ষক সমিতি। কুবি বন্ধের দায় উপাচার্যের—উল্লেখ করে আলোচনায় বসতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন সংগঠনের নেতারা। এ নিয়ে শিগগিরই সমাধানের কোনো পথ দেখছেন না শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে হতাশ তাঁরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭তম আবর্তনের শিক্ষার্থী এল কে জুবায়েদ হোসাইন বলেন, ‘চিঠি চালাচালি আমাদের হতাশ করছে। পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে পড়ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসছি, নাটক দেখতে না। আমাদের মোদ্দাকথা, ক্লাসে ফিরতে চাই।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মুজাহীদুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষক-উপাচার্যের দ্বন্দ্বে আমরা পরীক্ষায় বসতে পারিনি। তাঁদের দ্বন্দ্ব আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত করছে।’

জানতে চাইলে কুবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, ‘সিন্ডিকেটকে প্রভাবিত করে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়েছেন উপাচার্য। এখন বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে হবে, এ জন্য আমাদের সঙ্গে আলোচনা করার দরকার নাই। যখন তিনি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করেছেন, তখন তো কারও সঙ্গে আলোচনা করে করেননি। আর আমরাও উপাচার্যের অপসারণ বা পদত্যাগের দাবিতে এক দফা আন্দোলনে আছি। এর আগে যখন আমরা সাত দফা দাবি পূরণ চেয়েছিলাম, তখন তো তিনি আমাদের ডাকেননি।’

কুবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আব্দুল মঈন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছিল, তাই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ব্যাপারে সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখানে আমার কিছু করার সুযোগ নেই। সিন্ডিকেট শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া ও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার বিষয়ে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছে। কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনেও শিক্ষক সমিতি অনাস্থা দিয়েছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষার্থীদের ভালো চায় না, ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য আন্দোলন করছে। একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করতে শিক্ষক সমিতির সঙ্গে আলোচনার জন্য চিঠি দিয়েছিলাম। তারা সেই চিঠিতে সাড়া দেয়নি।’

উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণার আগে সাত দফা দাবিতে প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করে শিক্ষক সমিতি। পরে শিক্ষকদের সেই দাবি এক দফায় গিয়ে ঠেকে। উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকেরা। গত ২৮ এপ্রিল উপাচার্যপন্থী শিক্ষক ও শিক্ষক সমিতির নেতাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ জন্য একে অপরকে দায়ী করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয় দুপক্ষই। পরে উদ্ভূত সমস্যা এড়াতে সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ - dainik shiksha ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! - dainik shiksha সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! - dainik shiksha নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস - dainik shiksha এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037541389465332