কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের জন্য ‘ওমেন হাইজিন কর্নার’ বানিয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ (রেজা-স্বজন)। এবারের বিশ্ব মাসিক স্বাস্থ্যবিধি দিবসকে কেন্দ্র করে এ কর্নারের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন। সোমবার দুপুরে কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের দ্বিতীয় তলায় এই হাইজিন কর্নারটি উদ্বোধন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি অনুষদে এরকম একটি করে কর্নার করা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের দাবি খুব দ্রুতই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাকি অনুষদগুলোতেও এই কর্নার স্থাপন করা হবে। এই কর্নার থেকে ছাত্রীরা প্রয়োজন মত স্যানিটারি ন্যাপকিন নিয়ে ব্যবহার করতে পারবে।
ন্যাশনাল হাইজিন বেজলাইন সমীক্ষা অনুযায়ী, মাত্র ১০ শতাংশ স্কুলপড়ুয়া কিশোরী তাদের মাসিকের সময় স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করে। ৮৬ শতাংশ কিশোরী পুরনো কাপড় ব্যবহার করেন। এর মধ্যে মাত্র ১১ শতাংশ মেয়ে সঠিক নিয়ম মেনে কাপড় ব্যবহার করে। বাকিরা ঘরের কোনায় কাপড় রাখের, যা সম্পূর্ণভাবে জীবাণুমুক্ত করার আগেই ফের ব্যবহার করে। বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের যারা ঘরে থাকেন এবং কর্মজীবী নন, তাদের মধ্যে স্যানিটারি ব্যবহারের প্রবণতা মাত্র ১২ শতাংশ। দীর্ঘদিন অপরিষ্কার কাপড় ব্যবহারের ফলে নারীদের জরায়ুমুখের ক্যান্সার ও ইনফেকশন সমস্যা দেখা দেয়। দেশে প্রতি বছর ১৩ হাজার নারী মারা যাচ্ছে জরায়ুমুখের ক্যান্সারের কারণে।
এসব সমস্যা কাটিয়ে উঠতেই হাইজিন কর্নার করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান ছাত্রলীগ কর্মী লাকিয়া কবির। তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েই হাইজিন কর্নার আছে, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু ছিলো না। এ ব্যাপারে আমরা ভিসি স্যার এবং অন্যান্য শিক্ষকদের জানিয়েছিলাম। তাদের সহযোগিতায় ছাত্রলীগের তত্ত্বাবধানে আমরা প্রতিটা অনুষদে একটা করে ওয়াশরুমে হাইজিন কর্নার করেছি।
তিনি আরো বলেন, আপাতত আমরা এক মাস নিজেরাই চালাবো। স্পন্সরের জন্য চেষ্টা করছি। আমরা আশাবাদী দ্রুতই স্পন্সর ম্যানেজ হয়ে যাবে।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সভাপতি পদ প্রত্যাশী রেজা-ই-এলাহী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, স্মার্ট ক্যাম্পাসের গড়ার লক্ষ্যে ছাত্রলীগ নেত্রী লাকিয়া কবির ও রিয়া দাসের উদ্যোগে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহায়তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি অনুষদে মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য এই স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ.এফ.এম আবদুল মঈন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, স্যানিটারি ন্যাপকিন দোকানে কিনতে গিয়ে অনেকে লজ্জা পায়। মেয়েদের সুস্বাস্থ্য রক্ষায় জনসচেতনতামূলক যে কাজটি করায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে ধন্যবাদ জানাই।
এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন এন এম রবিউল আউয়াল চৌধুরী, ছাত্র পরামর্শক ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান , শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের প্রভোস্ট মো. মিজানুর রহমান, শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট মো. সাহেদুর রহমান, ছাত্রলীগের আগামী কমিটিতে পদপ্রত্যাশী রেজা-ই-ইলাহী, স্বজন বরণ বিশ্বাস সহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।