খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি (কুয়েট) বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. সেলিম হোসেনের গ্রামের বাড়িতে মানববন্ধন করেছেন নিহতের স্বজন, বাল্যবন্ধু ও এলাকাবাসী। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টায় কুষ্টিয়ার কুমারখালীর বাঁশগ্রাম ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে ওই মানববন্ধন হয়।
সেলিম হোসেনকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন ও লাঞ্ছনার মাধ্যমে হত্যা করার প্রতিবাদে তাঁরা এই মানববন্ধন করেন। সেলিম ওই বাঁশগ্রাম ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেছিলেন।
মানববন্ধনের আয়োজন করেন বাঁশগ্রাম ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২০০০ সালের এসএসসি ব্যাচ ও মাই রাইটস নামের একটি সংগঠন। এতে বাঁশগ্রাম আলাউদ্দিন আহমেদ ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক আলী হোসেন, ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফারুক আহমেদ, আওয়ামী লীগ নেতা মকবুল হোসেন, ছাত্রলীগ নেতা রিফাত আহমেদ, এসএসসি ২০০০ ব্যাচের ছাত্র সেলিমের সহপাঠী রূপকুমার রায়সহ শতাধিক মানুষ অংশ নেন।
বক্তারা দাবি করেন, ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটন করে সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক এবং দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় নিয়ে প্রচলিত আইনে বিচার করা হোক।
মানববন্ধনে সেলিম হোসেনের বাবা শুকুর আলী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি অসহায় ও গরিব মানুষ। অনেক কষ্ট করে সহায়-সম্বল বিক্রি করে ছেলে মানুষ করেছিলাম।
আমার সব শেষ। আমি এখন নিঃস্ব। এত বড় ঘটনা ঘটে গেল, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত কোনো খোঁজখবর নেয়নি। আমি মামলা করব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ছেলে হত্যার বিচার চাই।’
সেলিম হোসেনের দুলাভাই ও আওয়ামী লীগ নেতা মকবুল হোসেন বলেন, ‘সেলিমের মৃত্যু কোনো স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। তাঁকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। তাঁর স্ত্রীকেও মুখ না খোলার জন্য হুমকি দেওয়া হয়েছে। লাশ দাফনের দিন কুয়েটের এক শিক্ষক ও কিছু শিক্ষার্থী এসেছিলেন। তাঁরা তাড়াহুড়া করে লাশ দাফন করেছেন। প্রকৃত ঘটনা জানতে চাইলে তাঁরা বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং ঘটনাটি গোপনে বিশেষভাবে দেখা হবে বলে জানান।’
বাঁশগ্রাম আলাউদ্দিন আহমেদ কলেজের সহাকরী অধ্যাপক আলী হোসেন বলেন, সেলিম অত্যন্ত মেধাবী ও বিনয়ী ছিলেন। সেলিম দেশের সম্পদ ছিলেন। তাঁকে প্ররোচনার মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে।
সেলিমের বন্ধু বাঁশগ্রাম বহুমুখী বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক রূপকুমার বলেন, সেলিম ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। তাঁর এই অকালমৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।