সাতক্ষীরায় বিএনপির প্রস্তুতি সভায় হৈ হট্টগোল,হাতাহাতি, চেয়ার ছোড়াছুড়ি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার বিকেলে সাতক্ষীরা শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু উপস্থিতিতে সংঘর্ষে জড়ায় বিএনপির দুটি গ্রুপ। একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে জেলা বিএনপি সদস্য সচিব আব্দুল আলিম চেয়ারম্যান গ্রুপ ও জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক তারিকুল হাসান গ্রুপের মধ্যে এঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৬ নেতাকর্মী আহত হছে। পন্ড হয়ে যায় আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি খুলনা বিভাগীয় সন্মেলন উপলক্ষে সাতক্ষীরা জেলা বিএনপি প্রস্তুতি সভা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে আনে।
জানা গেছে, ৪ ফেব্রুয়ানি খুলা বিভাগীয় বিএনপির সমাবেশ সফল করতে মঙ্গলবার বিকাল ৪ টায় শহরের আমতলা এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির উদ্যোগে প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
সভায় দুঃখ প্রকাশ করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। তিনি এ সময় নিজেদের মধ্যে সকল দ্বিধাদ্বন্দ ভুলে যে কোন মূল্যে খুলনা বিভাগীয় মহাসমাবেশ সফল করার আহ্বান জানান।
বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান অতিথি আসার পর শান্তিপূর্ণভাবে সভা চলছিলো। এসময় সাতক্ষীরা বিএনপির সদস্য সচিব চেয়ারম্যান আব্দুল আলিমের একটি বক্তব্যকে ঘিরে বিএনপির একটি পক্ষ উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এসময় তারা আব্দুল আলিমকে আক্রমণ করার চেষ্টা করলে দুইপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রষ করে।
জেলা বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক তারিকুল হাসান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, আব্দুল আলিমের দায়িত্ব জ্ঞানহীন বক্তব্যের জেরে কেন্দ্রীয় নেতার উপস্থিতিতে এমন অঘটন ঘটলো। আব্দুল আলিম তার বক্তব্যে বলেছেন, অবস্থা যেদিকে যাচ্ছে, তাতে আমান হত্যার মতো ঘটনা ঘটতে পারে। তার এ বক্তব্যের পরপরই উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তিনি আগামীতে দায়িত্বশীল নেতাদের আরও সংযত আচরণের পরামর্শ দেন।
জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এটা উল্লেখ করার মতো তেমন বিষয় নয়। নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝিতে সামান্য উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিলো।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহ কমিটির সদস্য সাবেক এমপি কাজী আলাউদ্দিন, নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. শহিদুল আলম, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আব্দুর রউফ, শেখ তারিকুল হাসান, হাবিবুর রহমান হাবিব, মৃনাল কান্তি রায়সহ অনেকে।
প্রসঙ্গত, সাতক্ষীরা জেলা বিএনপি দু’ভাগে বিভক্ত। একটির নেতৃত্বে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব। তিনি জেলে যাওয়ার পর ওই অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বয়ক চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ ও তারিকুল হাসান। অপরগ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, জেলা বিএনপির আহবায়ক অ্যাড. সৈয়দ ইফতেখার আলী ও সদস্য সচিব আব্দুল আলিম। এই দু’গ্রুপের দ্বন্দ্ব বেশ পুরনো। অতীতে এই দু’গ্রুপের দ্বন্দ্বে শিল্পকলা একাডেমিতে খুন হন জেলা মৎস্যজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক আমান উল্লাহ আমান। বর্তমানে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচিগুলো দু’গ্রুপের ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় পালন করতে দেখা যায়।