কেন্দ্রের অবহেলায় ভর্তি অনিশ্চিত ১ হাজার ২০০ শিক্ষার্থীর

জামালপুর প্রতিনিধি |

চলতি বছর অনুষ্ঠিত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে গত ২৮ নভেম্বর। এরপর দেওয়া হয়েছে নম্বরপত্র। কিন্তু নম্বরপত্র দেখেই চোখ কপালে উঠেছে জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার ১ হাজার ২১৩ শিক্ষার্থীর। ক্যারিয়ার ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষায় ফেল করেছে তারা। পরে জানা গেল, তারা আসলে ফেল করেনি, দুটি পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে সঠিক সময়ে ব্যবহারিক বিষয়ের নম্বর ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে জমা না দেওয়ায় এমন ফল এসেছে নম্বরপত্রে। কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের এমন ভুলে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে এসব শিক্ষার্থীর কলেজে ভর্তি।

ভুক্তভোগী একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মেলান্দহ উপজেলার হাজরাবাড়ী উচ্চবিদ্যালয় ও ভাবকী জে এম উচ্চবিদ্যালয় পরীক্ষাকেন্দ্রে ১৪টি স্কুলের মোট ১ হাজার ২১৩ পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়েছে। তবে পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে ক্যারিয়ার ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বর ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে জমা দেওয়া হয়নি।

এ সমস্যা সমাধানের জন্য কিছুদিন আগে স্কুল কর্তৃপক্ষকে কয়েক দিনের আলটিমেটাম দিয়েছিল শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ না দেখে দুপুর ১২টায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করে তারা। এ সময় হাজরাবাড়ী উচ্চবিদ্যালয়ে ভাঙচুর করা হয়। পরে হাজরাবাড়ী পৌরসভা মেয়রের আশ্বাসে দুই দিনের জন্য বিক্ষোভ স্থগিত করে শিক্ষার্থীরা।

বিষয়টি নিয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আজাদুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, দুটি কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা শিক্ষা বোর্ডে ব্যবহারিক বিষয়ের নম্বর জমা দেননি। এ জন্য সমস্যা দেখা দিয়েছে। সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারবে না। শিক্ষা বোর্ডকে এ ব্যাপারে জানানো হয়েছে। দ্রুত সমাধান হবে। সমাধান হলে ভর্তি হতে পারবে শিক্ষার্থীরা।

ব্যবহারিক পরীক্ষার কথা বলে টাকা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে হাজরাবাড়ী উচ্চবিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। সজীব নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ব্যবহারিক বিষয়ের জন্য স্যারদের প্রতি বিষয়ে ২০০ করে টাকা

দিয়েছি। আমি প্রায় ৮০০ টাকা দিয়েছি। সব বিষয়ের ব্যবহারিক নম্বর দিলেও ক্যারিয়ার ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের ব্যবহারিক নম্বর দেয়নি। আমরা এখন একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারলেও পরে ভর্তি হতে পারব না।’

অভিযোগের ব্যাপারে হাজরাবাড়ী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোতালেব বলেন, ‘ক্যারিয়ার ও শারীরিক শিক্ষা বিষয়ের ব্যবহারিক নম্বরপত্র জমা দিতে সার্ভারের হয়তো সমস্যা হয়েছিল, তার জন্য জমা হয়নি। এ সমস্যা সমাধান করার জন্য শিক্ষা বোর্ডের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমার জানামতে ব্যবহারিক নম্বরের জন্য কোনো টাকা নেওয়া হয়নি।’

ভুক্তভোগী আরেক শিক্ষার্থী মাফিয়া আক্তার বলেন, ‘আমি জিপিএ-৪ পেয়েছি। যদি ব্যবহারিক নম্বর দেওয়া হতো তাহলে আমার জিপিএ আরও বেশি হতো। আমরা বিষয়টির দ্রুত সমাধান চাই। এটি সমাধান না হলে আমাদের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।’

ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. গাজী হাসান কামাল বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সমাধান করব। নম্বরপত্র আপডেট করতে আমাদের বেশি সময় লাগবে না। ভর্তি হতে কোনো সমস্যা হবে না, দ্রুত সমাধান হবে।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ - dainik shiksha ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! - dainik shiksha সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! - dainik shiksha নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস - dainik shiksha এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024409294128418