অবশেষে বাজারে এসেছে একাদশ শ্রেণির পাঠ্যবই। ক্লাস শুরু হওয়ার প্রায় সাড়ে তিন মাস পর এ বই বাজারে এলো। গতকাল সোমবার দেশের শিক্ষা বিষয়ক একমাত্র জাতীয় প্রিন্ট পত্রিকা দৈনিক আমাদের বার্তায় ‘অবশেষে বাজারে আসছে একাদশ শ্রেণির পাঁচ আবশ্যিক পাঠ্যবই’ শিরোনামে খবর প্রকাশিত হয়। তারপর রাজধানীর বাংলাবাজারের বই মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকে এসব বই লাইব্রেরিগুলোতে বিক্রির জন্য সাজানো হয়েছে। বাংলা সাহিত্য পাঠ, বাংলা সহপাঠ, ইংরেজি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বই চারটি এক সেট হিসেবে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। তবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ইংরেজি ভার্সনের বই গতকাল পাওয়া যায়নি।
বিক্রেতারা বলছেন, গতবছর ও এবছরের বইয়ের মধ্যে দামের মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য না থাকলেও বইয়ের মানে রয়েছে পার্থক্য। প্রতিটি সেটের বই সাড়ে চারশ থেকে শুরু করে পাঁচশ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন তারা।
বাংলাবাজারের পুস্তক বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান বিদ্যা জগতের ব্যাবস্থাপক মো. মিজান দৈনিক আমাদের বার্তাক বলেন, এবারের বই ধরতে গেলে ইতিহাসের সেরা। এবারের বই সাদা পেজের। কিন্ত আগের বারেরটা পঁচা বই ছিলো, কাগজের মান খারাপ ছিলো। এক সেট বই ৪৪০/৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
সাঈদ বুক হাউজের মালিক আবু সাঈদ দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, গত রাতে আমরা বই হাতে পেয়েছি। এখনো বিক্রি তেমনটা শুরু হয়নি। দু-এক দিনের মধ্যে বিক্রি বেড়ে যাবে। এবার চারটা বইয়ের গায়ের দাম ৫১১ টাকা। গত বছর ছিলো ৪৮২ টাকা। ৩১ টাকা দাম বেড়েছে। বইয়েও পরিবর্তন এসেছে।
বই পরিচয়ের স্টাফ আলমগীর হোসেন বলেন, আমরা ৪৫০ টাকা বিক্রি করছি। বইয়ের গায়ের দাম ৫১১ টাকা। কমিশন ১২ শতাংশ কমিশনে বিক্রি করা হচ্ছে। এই বইয়ে কমিশন কম।
এবারের একাদশ শ্রেণির ইংরেজি বই বিশ্লেষণে দেখা যায়, পাঠ্যসূচিতে এসেছে পরিবর্তন। নতুন বইয়ে বাদ গেছে বিগত বছরের বইয়ের প্রথম অধ্যায়। আগের বইয়ে ১৩টি অধ্যায় থাকলেও এবারের বইয়ে রয়েছে ১২টি। নতুন অধ্যায় হিসেবে যোগ হয়েছে ‘History’। এ ছাড়া বাদ গেছে 'People’s and Institutions Making History' এবং ‘Tours and Travels’ অধ্যায়টি। এ ছড়া অধ্যায়ের ক্রোনোলজিতেও এসেছে পরিবর্তন।
বাংলা সাহিত্যপাঠ বইয়েও এসেছে পরিবর্তন। প্রমথ চৌধুরীর ‘বর্ষা’ গদ্যের পরিবর্তে এসেছে ‘সাহিত্যে খেলা’, রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের ‘গৃহ’ গদ্যের পরিবর্তে এসেছে ‘অর্ধাঙ্গী’ এবং কাজী নজরুল ইসলামের ‘আমার পথ’ পরিবর্তন করে দেয়া হয়েছে ‘যৌবনের গান’। এ ছাড়া বাদ পড়েছে জাফর ইকবালে ‘মহাজাগতিক কিউরেটর’ এবং শেখ মুজিবুর রহমানের ‘বায়ান্নর দিনগুলি’। পদ্য অংশে বাদ পড়েছে দিলওয়ারের ‘মানুষ সকল সত্য’ এবং মহাদেব সাহার ‘শান্তির গান’। এ ছাড়া ক্রোনোলজিতেও এসেছে পরিবর্তন।
এ ছাড়াও এনসিটিবির ওয়েবসাইটের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বইয়ে দেখা যায়, গত বছরের পাণ্ডুলিপিতে পৃষ্ঠা সংখ্যা ছিলো ২২৬টি। এবারের বইয়ে পৃষ্ঠা সংখ্যা ২১৯টি।
এদিকে নতুন বই পেয়ে স্বস্তি প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। এক অভিভাবক আল-আমিন বলেন, এতোদিন বই বাজারে আসেনি। পুরোনো বই দিয়েই ছোট ভাইকে পড়াচ্ছিলাম। আজ বই আসবে শুনেছিলাম। এজন্য বই কিনতে এসেছি। নতুন বই ও সিলেবাস অনুযায়ী পড়ানো সুবিধা হবে।
একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. সিয়াম দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, নতুন বই পড়তে ভালো লাগে। ক্লাসে উঠেছিলাম কিন্ত নতুন বই পাচ্ছিলাম না, পুরোনো বই দিয়েই পড়ছিলাম। অবশেষে নতুন বই কিনতে পারলাম। গত বছরের বইয়ের চেয়ে এবারের বইয়ের পৃষ্ঠা দেখে ভালো মনে হচ্ছে।
এর আগে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. একেএম রিয়াজুল হাসান এ সপ্তাহেই শিক্ষার্থীরা বই পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বইয়ের পাণ্ডুলিপিতে ‘কিছু চেঞ্জ’ আনা হয়েছে সেজন্য একটু বিলম্ব হয়েছে।
শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।