সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহালের প্রতিবাদ ও কোটা সংস্কারের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগসহ বিভিন্ন সড়কে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। এ সময় পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে আন্দোলনে অংশ নেন তারা শিক্ষার্থীরা। এদিকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়য় ও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৩৬ শিক্ষার্থী।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শাহবাগে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ব্যারিকেড দিয়ে বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় ব্যরিকেড ভেঙে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন আন্দোলনরকারীরা। এদিন বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে শাহবাগের দিকে অগ্রসর হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। তবে শাহবাগ মোড়ে ব্যারিকেড দেয় পুলিশ। এতে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের কিছু সময় ধস্তাধস্তি হয়। পরে শিক্ষার্থীদের বাধা দিতে জলকামান ও সাঁজোয়াযানও সরিয়ে নেয় পুলিশ।
এদিকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকসহ অন্তত ২৬ জন আহত হয়েছেন। বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করার উদ্দেশে বের হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে আনসার ক্যাম্প সংলগ্ন স্থানে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরপর আবাসিক হল ও মেসের প্রায় সাত-আটশ শিক্ষার্থী এসে যুক্ত হয়ে পুলিশের বাধা অতিক্রম করে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশ প্রথমে লাঠিচার্জ, পরে শর্টগান দিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলির পাশাপাশি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে অন্তত ২৬ শিক্ষার্থী আহস হন।
অন্যদিকে, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেকেন্ড গেটের সামনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ৷ কিছুক্ষণ পর এটি সংঘর্ষে রূপ নেয়। এতে আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন সাধারণ শিক্ষার্থী।
দৈনিক আমাদের বার্তার প্রতিনিধি জানান, প্রধান ফটকের তালা ও পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে আন্দলনে অংশ নেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়য়ের শিক্ষার্থীরা। এদিন অন্তত তিন স্থানে পুলিশি বাধা পেরিয়ে শাহবাগে আন্দলনে যোগ দেন জবির শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজার ও রায়সাহেব বাজার মোড়ে পুলিশ ব্যারিকেড দেয়। তবে শিক্ষার্থীদের ব্যারিকেড এবং বাধা দিয়ে ধরে রাখতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
দৈনিক আমাদের বার্তার প্রতিনিধি জানান, পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গ্রন্থাগার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রধান ফটকের (ডেইরি গেট) তালা ভেঙে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়য়ের শিক্ষার্থীদের মিছিলেও পুলিশের বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় শিক্ষার্থীরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে মিছিল নিয়ে এগিয়ে গেলে কয়েকজনকে লাঠিপেটা করে পুলিশ। বিকেল পৌনে পাঁচটায় চট্টগ্রাম নগরের টাইগারপাস মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। এরপর শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে দেড় কিলোমিটার দূরত্বের ২ নম্বর গেট এলাকায় এলে সেখানেও পুলিশ ধাওয়া দিয়ে লাঠিপেটা করে। এসব উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা ২ নম্বর গেটেই অবস্থান নেন।