দেশব্যাপী চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনে সরাসরি যুক্ত থাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক ছাত্রকে আদালত অবমাননার মামলা দেয়ার হুমকি দিয়েছে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দিন।
একই সঙ্গে বিভাগের ডিবেটিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকেও ওই ছাত্রকে বহিষ্কার করেন জামাল উদ্দিন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ক্লাবের প্রায় ২৫ সদস্য একযোগে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
শনিবার (৬ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশিওলজিকাল ডিবেটিং সোসাইটির মডারেটর ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. আকম জামাল উদ্দিন লিখিত বার্তায় এ বহিষ্কারের ঘোষণা দেন।
বহিষ্কার আদেশে তিনি বলেন, বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার জন্য ডিবেটিং সোসাইটির সাধারণ সম্পাদকের পদ হতে মোশররফকে অব্যাহতি দেয়া হলো। নতুন সাধারণ সম্পাদক সারাফ আফ্রা মৌ। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ডিবেটিং সোসাইটির কমিটি পুনর্গঠন করা হবে। সবাইকে সভাপতি ফারজানা আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হলো।
বহিষ্কারের বার্তায় তিনি আরো বলেন, যারাই সমাজবিজ্ঞান বিভাগে বিতর্কিত বিভাজিত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হবেন, তারা কখনই ছাত্র-ছাত্রীদের সার্বজনীন কমিটিসমূহের নেতৃত্বে আসতে পারবেন না। ক্লাস ক্যাপ্টেনসহ এ জাতীয় কোনো ধরনের নেতৃত্বে আসতে পারবেন না। যারা বাইরের ঘটনাকে নিয়ে বিভাগের সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্টের কারণ হবে, তারা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
শুধু কোটা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকায় সংগঠন থেকে সাধারণ সম্পাদককে বহিষ্কার করা মেনে নিতে পারছেন না বিভাগটির সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ফলে ক্লাবের বিভিন্ন পদে থাকা ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা একযোগে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
ইতোমধ্যে ক্লাবের ২৬ সদস্যের পদত্যাগের তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বিভাগের শুধু ১৬তম ব্যাচেরই ২২ জন পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তারা বলছেন, কোটা আন্দোলনের মতো সর্বসাধারণের এমন আন্দোলনের যুক্ত থাকায় তাকে বহিষ্কার অগ্রহণযোগ্য।
এ বিষয়ে সংগঠনটির বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আমাদের বার্তাকে বলেন, আমি এটা প্রত্যাশা করিনি। তবে আমি নৈতিকতা বিক্রি করে দিতে পারবো না। আমি আর এই বিষয় নিয়ে কথাও বলতে চাই না। কোটা আন্দোলন সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন।
এ বিষয়ে জানতে ডিবেটিং ক্লাবের মডারেটর অধ্যাপক ড. আকম জামাল উদ্দিনকে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
ঘটনার বিষয়ে সোশিওলজিকাল ডিবেটিং ক্লাবের চিফ মডারেটর ও বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেন, আমি বিষয়টি একটু আগেই জানতে পেরেছি। বিস্তারিত জানা ছাড়া আমার পক্ষে মন্তব্য করা সম্ভব নয়। তা ছাড়া আমরা পেনশন স্কিম নিয়ে লাগাতার একটা কর্মসূচিতে রয়েছি। তাই এই বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।