আলটিমেটাম মোতাবেক ঈদের লম্বা ছুটির পর কোটা ইস্যুতে ফের মাঠে নেমেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সোমবার প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ব্যাপক সোডাউন করেন তারা।
এদিন, সকালে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ এর ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। পরে তা মলচত্বর, ভিসি চত্বর, টিএসসি হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশে রূপ নেয়।
এ সময় ‘কোটা না মেধা?’ ‘মেধা মেধা, হাইকোর্টের রায় মানি না মানবো না’, ‘কোটা বাতিল কর, বাতিল কর’, ‘ছাত্রসমাজ গড়বে দেশ, মেধাভিত্তিক বাংলাদেশ’ ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ এমন স্লোগান দেন তারা।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, আজকে কোটা প্রথা পরিবারগুলোকে আমরা কীভাবে বলতে পারি পিছিয়ে পড়া দল তারা ২০ হাজার টাকা শুধু সম্মানীই দেয়া হয় আর অনেক প্রান্তিক পরিবার ২০ হাজার টাকায় পুরা মাস চালায়। সেখানে কোটা দেয়া কতোটা যৌক্তিক। সুবিধা প্রাপ্তরাই কেবল সুবিধা পাবে এই কোটা প্রথায়।
শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, আওয়ামী লীগ মুক্তি যুদ্ধের পক্ষের সরকার বলেই আমরা জানি। সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের দুঃখ দূর করেছে। তারপরেও কোন যুক্তিতে তাদেরকে ৩০ শতাংশ কোটা দিতে হবে?
আমাদের দাবি ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে এবং পরবর্তীতে সেটি সংস্কার করে ১০ শতাংশে নিয়ে আসতে হবে। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বো না। এ সময় শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি তোলেন।
দাবি গুলো হলো-
আঠারোর পরিপত্র বহাল করতে হবে। সরকার পরবর্তীতে পদক্ষেপ নিতে চাইলে তা ১৮ খ্রিষ্টাব্দের পরিপত্র মোতাবেক হতে হবে। কেবল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা সুবিধা বহাল রাখা যেতে পারে। সরকারি চাকরি নিয়োগ পরীক্ষায় একাধিকবার কোটা ব্যাবহার করা যাবে না এবং কোটায় শূন্য থাকা পদগুলোতে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের তুমুল আন্দোলনের মুখে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং জেলা কোটা ১০ শতাংশ বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার। সেখানে বলা হয়েছিলো, ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। ওইসব গ্রেডের পদে সরাসরি নিয়োগে বিদ্যমান কোটা বাতিল করা হলো।