সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন করপোরেশনে চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল সংক্রান্ত পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় চাকরিতে সব ধরনের কোটা বাতিলের দাবি জানান তারা। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের ঘোষণাও দেন আন্দোলনকারীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ আন্দোলন শুরু হয়। পরে মিছিল নিয়ে বাহাদুর শাহ পার্ক ঘুরে প্রধান ফটকের সামনে সমাবেশ করেন আন্দোলনকারীরা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘চাকরিতে কোটা, মানি না, মানবো না’, শেখ হাসিনার বাংলায়/শেখ মুজিবের বাংলায়, কোটার ঠাঁই নাই’, মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, কোটার ঠাঁই নাই’ সহ নানা স্লোগান দেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার তিপ্পান্ন বছর পরে এসে এই বৈষম্য মানা যায়। বঙ্গবন্ধু একটি বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য আজীবন কাজ করেছেন। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল কোটা বাতিল করেন। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের অমান্য করে হাইকোর্ট এ সিদ্ধান্ত নেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী জসীম উদ্দীন বলেন, কোনোভাবেই কোটা রাখা যাবে না। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈষম্য করা যাবে না। এর জন্য যদি ছাত্রসমাজকে রাস্তায় নামতে হয়, আমরা নামাবো। আপনারা যারা উপস্থিত আছেন, সবাই এ আন্দোলনে সোচ্চার হোন।
চাকরিপ্রত্যাশী আরেক শিক্ষার্থী মুন্না বলেন, এই বৈষম্য দূর করার জন্য যদি এক মাস রাজপথে থাকতে হয়, তাহলে আমরা থাকবো। তবে এই বৈষম্য দূর করেই ছাড়বো।
প্রসঙ্গত, গতকাল এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ কোটা বহালের রায় দেন। কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণার ফলে এখন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে নিয়োগ দেয়ায় আর কোনো বাধা থাকলো না।
পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে রিট করেন চাকরিপ্রত্যাশী ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন। এর আগে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ আন্দোলনের পর সরকারি চাকরিতে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৪৫ শতাংশ কোটা তুলে দিয়ে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ৩ অক্টোবর মন্ত্রিসভায় এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।