ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি করতে চায়। এজন্য তো মেধাবীদের প্রয়োজন। কোটায় নিয়োগ পাওয়া আমলাদের দিয়ে তো স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি সম্ভব হবে না। গতকাল এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে কোটা সংস্কার আন্দোলেনে নেতৃত্ব দেওয়া নুরুল হক বলেন, কোটার বিষয়ে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে সরকার প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জানিয়েছে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে কোনো কোটা থাকবে না। যদিও আমাদের দাবি ছিল কোটার যৌক্তিক সংস্কার। বর্তমান বাস্তবতায় আসলে কোটার কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, নারীরা বিভিন্ন চাকরির ক্ষেত্রে বর্তমানে পিছিয়ে নেই। এসএসসি-এইচএসসিতে পাসের ক্ষেত্রে মেয়েরা এগিয়ে থাকে। এটি প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, ফলাফলে ছেলেরা মেয়েদের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনেক বিভাগে ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের সংখ্যা বেশি। দেশের কোনো জেলাই চাকরির ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ক্ষেত্রেও রয়েছে একই চিত্র।
ডাকসুর সাবেক ভিপি বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য সরকারি চাকরিতে কোটা ছিল। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পর্যন্ত চাকরিতে কোটা সমর্থন করা যায়। কিন্তু তাদের নাতি-নাতনি বা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কোটা দেওয়া একেবারেই অযৌক্তিক। আমি মনে করি চাকরিতে এ কোটাগুলো রাখা হয়েছিল শুধু দুর্নীতি এবং স্বজনপ্রীতির জন্য। বর্তমানে কোনো কোটারই আর প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি। তরুণ এ রাজনীতিক মনে করেন, দেশের উচ্চশিক্ষিত তরুণদের বৃহৎ অংশ এখন দেশে থাকতে আগ্রহী নয়। কারণ দেশে সামাজিক এবং আর্থিক নিরাপত্তা নেই মনে করে তারা বিদেশমুখী হচ্ছেন। আর পড়াশোনার জন্য যারা বিদেশে যাচ্ছেন তারা সেখানে কোনো তদবির বা লবিং ছাড়াই ভালো বেতনের চাকরি করছেন। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে বর্তমানে এদেশে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাবীদের নিয়োগ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। সেটিও যদি কোটা দিয়ে সংকুচিত করা হয় তবে মেধাবীরা আরও বিদেশমুখী হবে। নুরুল হক বলেন, কোটা বাতিলে সরকারের প্রজ্ঞাপন বহাল দাবিতে বর্তমানে ছাত্ররা আন্দোলনে রয়েছে, তারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে। দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, বর্তমানে বিভিন্ন বিষয় আন্দোলনের মাধ্যমে ফয়সালা করতে হচ্ছে আমাদের। ছাত্ররাও আন্দোলন করছেন আবার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরাও তাদের দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন। কোটা নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়টি আমলে না নিলে এটি সরকারের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে বলে আমি মনে করি।