‘কোনো কোনো মামলায় বুদ্ধিবৃত্তিক (ইনটেলেকচুয়াল) দুর্নীতি হচ্ছে’ বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নূরুজ্জামান ননী। বৃহস্পতিবার বিচারিক কর্মজীবনের শেষ দিনে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
চাকরিবিধি অনুযায়ী আগামী ৩০ জুন বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ননী অবসরে যাবেন। তবে আগামী সপ্তাহে তিনি হজে যাবেন। এ লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের এজলাসে তার বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীসহ আপিল বিভাগের সকল বিচারপতি ও আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান বলেন, ‘বিচারকরা নিজেরা স্বাধীন না হলে সংবিধানে যা’ই লেখা থাকুক না কেন বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আসবে না।’
বিচারালয়ের পবিত্রতা নষ্ট হয় এমন কাজ বিচারক-আইনজীবীরা করতে পারে না উল্লেখ করে বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান বলেন, ‘এটা আমার মতামত যে, কোনো কোনো মামলায় (ইনটেলেকচুয়াল) বুদ্ধিবৃত্তিক দুর্নীতি হচ্ছে।’
বিচারপতি ও আইনজীবীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে তিনি আরও বলেন, ‘আইনজীবী সমিতি হচ্ছে বিচারক তৈরির সূতিকাগার। সেই আইনজীবী সমিতিতে যদি ঐক্য না থাকে, তাহলে আমাদের অন্তরে কষ্ট লাগে। কারণ, আমরাও (বিচারকরা) আইনজীবী সমিতি থেকেই এসেছি।’
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রেওয়াজ অনুযায়ী অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের পক্ষ থেকে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষে সমিতির সভাপতি মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির বক্তব্য রাখেন। তারা বিচারপতি মো. নূরজ্জামানের কর্মময় জীবন এবং জীবনবৃত্তান্ত তুলে ধরেন। এসময় আপিল বিভাগের আদালত কক্ষ আইনজীবীদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ ছিল।
বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ সাব ডিভিশনে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেন। ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে তিনি জেলা জজ আদালতের তালিকাভুক্ত আইনজীবী হন। ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দের তিনি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের তিনি হাইকোর্টে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। দুই বছর পর ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের তিনি হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হন। এরপর ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ৮ অক্টোবর বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান আপিল বিভাগের বিচারপতি হন।