ক্যাডারবহির্ভূত সহকারী সচিব, সিনিয়র সহকারী সচিব ও উপসচিবের তিনটি পদে প্রাপ্যতা অনুযায়ী পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে না। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রাপ্যতা অনুসারে পদ সংরক্ষণ না করে অন্যায়ভাবে তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তবে প্রশাসনসংশ্লিষ্টরা বলছেন, অভিযোগটি সত্য নয়, বরং বিধিবিধান মেনে পদোন্নতির কাজ করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, সচিবালয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে কর্মরত প্রশাসনিক কর্মকর্তা (এও) এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তাদের (পিও) মধ্য থেকে ক্যাডারবহির্ভূত সহকারী সচিব, সিনিয়র সহকারী সচিব ও উপসচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। ১৯৯২ সালে সচিবালয় ক্যাডার প্রশাসন ক্যাডারে একীভূত হওয়ার পর থেকে আনুপাতিক হারে এও এবং পিওদের মধ্য থেকে উল্লিখিত ৩টি পদে পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে। বিধিমালা অনুসারে ক্যাডার কর্মকর্তাদের এক-তৃতীয়াংশ ক্যাডারবহির্ভূত পদ সৃষ্টি হবে। অর্থাৎ সচিবালয়ে সহকারী সচিবের ১০০টি পদ সৃষ্টি হলে ক্যাডারবহির্ভূত ৩৩টি পদ সৃষ্টি হবে। তবে প্রাপ্যতা অনুযায়ী তাদের পদোন্নতি না দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে ২০১৮ সালে ইকনোমিক ক্যাডার প্রশাসন ক্যাডারে একীভূত হওয়ার পর থেকে প্রাপ্যতা অনুযায়ী ক্যাডারবহির্ভূত ওই তিনটি পদ সংরক্ষণ করা হয়নি। তখন থেকেই এও এবং পিওরা প্রাপ্যতা অনুসারে পদ সংরক্ষণের দাবি করে আসছেন।
বর্তমানে সচিবালয়ে ক্যাডারবহির্ভূত সহকারী সচিবের অনুমোদিত পদ ২৬৭টি। প্রাপ্যতা অনুযায়ী আরও ২৬৮টি পদ সংরক্ষণের দাবি করছেন এও-পিওরা। সিনিয়র সহকারী সচিবের অনুমোদিত পদ ৭২টি। আরও ৮৯টি পদ এবং উপসচিবের বিদ্যমান ৯টির সঙ্গে আরও ২৯টি পদ সংরক্ষণের দাবি করছেন তারা।
প্রশাসনসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্যাডারবহির্ভূত সিনিয়র সহকারী সচিব অথবা উপসচিব পদে কাজ করার মতো যোগ্য কর্মকর্তা নেই বললেই চলে। তবে আশার খবর হচ্ছে সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে যারা এও-পিও হিসাবে নিয়োগ পেয়েছেন তাদের মধ্যে অনেকের যোগ্যতা রয়েছে।
জানতে চাইলে অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুস সবুর মন্ডল বলেন, পদ সংরক্ষণের বিষয়ে একাধিক বৈঠক হয়েছে। আরও হবে। হতাশ হওয়ার কিছু নেই। ইতিবাচক একটি সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগবে। এ সময়টুকু দিতে হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইকোনমিক ক্যাডার একীভূত হওয়ায় প্রাপ্যতা অনুযায়ী আনুপাতিক হারে ক্যাডারবহির্ভূত সহকারী সচিব ও সিনিয়র সহকারী সচিবের পদ সংরক্ষণ করা হবে কিনা তা এখনই বলা যাবে না। বিষয়টি সভায় সিদ্ধান্ত হবে।
পদোন্নতিযোগ্য সিনিয়র এও এবং পিওরা জানান, ক্যাডার কর্মকর্তাদের পদ সৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে ক্যাডারবহির্ভূত সহকারী সচিব, সিনিয়র সহকারী সচিবের পদ সৃষ্টি হওয়ার বিধান রয়েছে। জানা যায়, তাদের এসব যৌক্তিক দাবি নিয়ে কথা বলার মতো শক্তিশালী কোনো সংগঠন নেই। এও-পিওদের সংগঠন কয়েক ভাগে বিভক্ত। তারা ব্যক্তিস্বার্থ নিয়ে দলাদলিতে লিপ্ত। ফলে তাদের পেশাগত মর্যাদার দাবি সামনে নিয়ে আসার মতো নেতৃত্ব নেই।