দৈনিক শিক্ষাডটকম, রাজশাহী : রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে এসে জুতা মারতে চাওয়া মাহাবুর রহমান মাহাম নামের সৈনিক লীগ নেতা ক্ষমা চেয়েছেন। আর কখনও তিনি ফেসবুকে এমন মন্তব্য করবেন না মর্মে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির সামনে বুধবার উপস্থিত হয়ে অঙ্গীকার করেছেন।
মাহাবুর রহমান মাহাম রাজশাহী জেলা সৈনিক লীগের সাধারণ সম্পাদক। গত শনিবার রাতে নিজের ফেসবুকে মাহিয়া মাহিকে তিনি ‘জুতা’ মারতে চান। এ কারণে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ মো. আবু সাঈদ তাকে সশরীরে উপস্থিত হয়ে জবাব দিতে শোকজ করেন।
বুধবার দুপুরে হাজিরা শেষে সৈনিক লীগ নেতা মাহাবুর রহমান বলেন, ‘আগে জানতাম না, এটা নির্বাচনী আইন ভঙ্গের মধ্যে পড়ে। আবেগে বলে ফেলেছিলাম। ভুল মানুষেরই হয়। আমি ক্ষমা চেয়েছি। মেয়ে জাতি হচ্ছে মা জাতি। আমার মা আছে, বোন আছে। স্যার, এভাবে বলা ঠিক হয়নি। আমার নেতাকে (ওমর ফারুক চৌধুরী) ভালোবাসি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করি। এ কারণে আমি আবেগে বলে ফেলেছিলাম। অনেকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন আদালত। আমি বলেছি, আর কোনো দিন ফেসবুকে আমি এগুলো করব না। আদালত আমাকে কঠোরভাবে সতর্ক করেছেন। এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন।’
এর আগে অনুসন্ধান কমিটির পাঠানো নোটিশে উল্লেখ করা হয়, শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে ফেসবুকে স্বতন্ত্র প্রার্থী শারমিন আক্তার নিপা মাহিয়া সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ ও মানহানিকর ভিডিও প্রকাশ করেন মাহাবুর রহমান।
গণমাধ্যম ও ফেসবুকের মাধ্যমে বিষয়টি অনুসন্ধান কমিটির নজরে আসে। ভিডিওতে ভবিষ্যতে নির্বাচনী প্রচারের সময় মাহিয়া মাহিকে জুতাপেটা, প্রচারণায় বাধাসহ যেকোনো ধরনের ক্ষতি করা হবে বলে জানানো হয়। ওই বক্তব্যের মাধ্যমে মাহাবুর রহমান সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধিমালা, ২০০৮-এর ১১(ক) বিধি লঙ্ঘন করেছেন, যা নির্বাচন–পূর্ব অনিয়ম হিসেবে গণ্য হবে।ঘটনার পরদিন মাহিয়া মাহির পক্ষে তানোর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তাঁর ফুফাতো ভাই মো. জাহেদুল ইসলাম।
রাজশাহী-০১ আসনে এবার ১১ জন প্রার্থী ভোটে লড়ছেন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী এমপি (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহিয়া মাহি (ট্রাক), গোলাম রাব্বানী (কাঁচি), আখতারুজ্জামান (ঈগল), শাহনেওয়াজ আয়েশা জাহান বেলুন), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির নুরুন্নেসা (আম), জাতীয় পার্টির শামসুদ্দিন (লাঙ্গল), তৃণমূল বিএনপির জামাল খান (সোনালী আঁশ), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের বশির আহমেদ (ছড়ি), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের আল সামাদ (টেলিভিশন), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সামসুজ্জোহা বাবু (নোঙ্গর) প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।