খরচ বাঁচাতে পুরনো বইয়ে ঝুঁকছেন ক্রেতারা

আসাদুল ইসলাম |

ঢাকায় পুরাতন বইয়ের তিনটি বিখ্যাত বাজারের একটি হলো বাংলাবাজার। বাকি দুটি হলো পুরানা পল্টন ও নীলক্ষেত। নতুন বই ছাপা ও বিক্রয়ের জন্য বাংলাবাজার বিখ্যাত হলেও পুরোনো বই ক্রয়-বিক্রয়েও বাংলাবাজারের বেশ খ্যাতি রয়েছে। এ ছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অল্প পরিসরে কিছু দোকান রয়েছে।

রাজধানীর সদরঘাট যেতে ফুটওভার ব্রিজ মোড়ে এসে বাদিকেই বাংলাবাজার রোড। এ রাস্তার পাশেই ফুটপাতে রয়েছে সারি সারি এসব পুরোনো বইয়ের দোকান। গল্পের বই থেকে শুরু করে যেকোনো ধর্মীয় বই, অ্যাকাডেমিক বই বা চাকরি প্রস্তুতির পুরোনো বই পাওয়া যায় বাংলাবাজারের এসব দোকানে।

 এসব দোকানে শুধু যে পুরোনো বই বিক্রি হয় তা নয়, বিক্রেতারা পুরোনো বই কেনেনও। বই পড়ার পর অনেকেই তাদের বই পুরানো বইয়ের দোকানে কম দামে বিক্রি করেন। পরবর্তীকালে ব্যবসায়ীরা লাভজনক মূল্যে সেসব বই আবার নতুন কোনো ক্রেতার কাছে বিক্রি করেন।

এদিকে, নতুন বইয়ের দামের তুলনায় পুরানো বইয়ের দাম সস্তা হওয়ায় পাঠকদের মধ্যে পুরানো বই কেনার প্রবণতা বেশ লক্ষ্যণীয়। বিক্রেতারা বলছেন কাগজে দাম বৃদ্ধি পাওয়ার পর নতুন বইয়ের দামও বেড়েছে। তাই সাশ্রয়ী মূল্যে বই কেনার জন্য অনেক ক্রেতাই এখন পুরোনো বইয়ের দোকানগুলোর দিকে ঝুঁকছেন।

মাস্টার্সে অধ্যয়নরত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন বাংলাবাজারে এসেছেন এমবিএ'র একটি অ্যাকাডেমিক বই কিনতে। তিনি বলেন,  অনেক জায়গায় খুজেও নতুন বা পুরাতন কোনো বই পাচ্ছিলাম না। তাই যাওয়ার সময় ভাবলাম বাংলাবাজারে একটু খুঁজি। এখানে এসে পেয়েছি। 

মো. আব্দুস সালাম এসেছেন ছেলের জন্য বই কিনতে। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে এবার ইন্টারমিডিয়েট সেকেন্ড ইয়ারে উঠেছে। ওর জন্য পুরাতন টেস্ট পেপার কিনতে এসেছি। দাম কম হলেও বই নতুনের মতো।’
চাকরি প্রস্তুতির বই কিনতে আসা মো. শামীম নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, চাকরি প্রস্তুতির জন্য বই কিনতে এসেছি। বাংলার জন্য বই কিনবো। সাহিত্য তো আর পরিবর্তন হয় না। তাই পুরাতন বই খুঁজছি। নতুন বইয়ের চেয়ে অনেক কম দামে ভালো বই কেনা যায় এখানে।

রাজধানীর বাংলাবাজারের পুরাতন বইয়ের দোকান বৈশাখী স্টোরের মালিক আকতার হোসেন জানান, তিনি দ্বাদশ শ্রেণি পর্যায় পর্যন্ত বইগুলো বিক্রি করেন। তিনি বলেন, ‘আমার দোকানে ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত বইগুলো বিক্রি করি। নতুন বইয়ের চেয়ে দাম অনেক কম হওয়ায় শিক্ষার্থীরা এই বইগুলো কিনতে আসে। দাম কম হলেও বইয়ের মান ভালো। দাগ বা ছেড়া সেরকম থাকে না।’

পুরাতন এসব বই তিনি কীভাবে সংগ্রহ করেন জানতে চাইলে বলেন, শিক্ষার্থীরা বই পড়ার পর অনেকেই আমাদের কাছে বিক্রি করে। এ ছাড়াও কিছু বই পাইকারি বিক্রেতাদের কাছ থেকে কিনি। অনেকেই আবার এ বই দিয়ে অন্য কোনো বই নিয়ে যান।

মো. জামাল নামের আরেক বিক্রেতা জানান, তার দোকানে চাকরির বইসহ যেকোনো বই পাওয়া যায়। তিনি বলেন, অনেক শিক্ষার্থী তাদের পুরোনো বই আমাদের কাছে বিক্রি করে যান। আমরা কম দামে সেগুলো কিনে আবার কিছু লাভ রেখে সেগুলো বিক্রি করি।

 বেচাকেনার বিষয়ে তিনি বলেন, পড়াশোনা তো এখন সব ইন্টারনেটে হয়ে গেছে। সবকিছু ইন্টারনেটে পাওয়া যায়। তারপরও ছাপা বইয়ের চাহিদা আছে। আমরা কম দামে বিক্রি করি বলে ক্রেতারা আসেন। 

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE  করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ - dainik shiksha বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি - dainik shiksha যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি - dainik shiksha তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই - dainik shiksha শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী - dainik shiksha বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0051560401916504