খাবার বেচে কুমিল্লায় স্কুল বানালেন জাপানি শিক্ষক

দৈনিকশিক্ষাডটকম, কুমিল্লা |

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার লালমাই পাহাড়ের গহিন এলাকা বড় ধর্মপুর। সেখানে গড়ে ওঠে মজুমদার ওয়ান ড্রপ প্রাইমারি স্কুল। স্কুলের প্রধান ফটকে জাপানি, ইংরেজি ও বাংলায় স্কুলের নাম লেখা রয়েছে। ফটকের ওপরে উড়ছে বাংলাদেশ ও জাপানের পতাকা। মাঠে শিশুদের সঙ্গে নাচানাচি করছেন কয়েকজন বিদেশি। জাপান থেকে এসেছেন তারা। অন্যপাশে গলায় চকলেটের মালা নিয়ে দাঁড়িয়ে আরেক দল শিশু। এবার প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হবে তারা। এ শিশুদের বরণ করতেই জাপানি নাগরিকদের এ আয়োজন।

শিক্ষার্থীদের পরনে সবুজ প্যান্ট ও সাদা জামা। কোনো কোনো চেয়ার-টেবিল লাল-সবুজ রঙের। কোনোগুলো আবার সাদা। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত এখানে পড়ানো হয়। প্রতি শ্রেণিতে ২০ জন করে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০০ জন। বৃহস্পতিবার প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বরণ ও খেলাধুলার আয়োজন ছিল। তাই তাদের সঙ্গে জাপানিদের মজা করতে দেখা যায়।

জানা গেছে, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে গড়ে ওঠে মজুমদার ওয়ান ড্রপ প্রাইমারি স্কুল। এটির ৪০ শতাংশ ব্যয় বহন করেন সদর দক্ষিণ উপজেলার তারিক উল ইসলাম মজুমদার ও তার স্ত্রী নাহিদা আক্তার মজুমদার। বাকিটা বহন করেন তাদের জাপানি বন্ধু অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক তোশিকো ওনিশি ও তার বন্ধুরা। তোশিকো ওনিশি অবসরে জাপানের বিভিন্ন স্কুলে বাংলাদেশি খাবার বিক্রি করেন। সেই টাকা দিয়ে এ স্কুলে সহায়তা করেন। বৃহস্পতিবার চার জাপানি বন্ধু আসেন লালমাই পাহাড়ের মজুমদার ওয়ান ড্রপ প্রাইমারি স্কুলে। সেখানে তারা জানান স্কুল প্রতিষ্ঠার ইতিহাস।

তোশিকো ওনিশি বলেন, শিশুদের মুখের হাসি দেখতে জাপান থেকে এসেছি। কখনো কখনো জাপানে বাংলাদেশি খাবার বিক্রি করি। এতে যা আয় হয়, তাই তাদের জন্য পাঠাই। এখানে এলে মন ভালো হয়ে যায়। জাপানে তরুণের সংখ্যা কম, এখানের তরুণদের দেখে হিংসে হয়! তাদের মধ্যে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। বন্ধুরা নিজেদের আয় থেকে স্কুলটি পরিচালনা করি। কতদিন চালাতে পারব, জানি না। কেউ ইচ্ছে করলে স্কুলের খরচ বহনে অংশ নিতে পারেন। সংস্কৃতির বিষয়ে জানতে চাইলে ওনিশি বলেন, জাপান বাংলাদেশের সংস্কৃতি ভিন্ন। তবে আমার ভালো লাগে এ দেশের সংস্কৃতি। বিশেষ করে বিরিয়ানি। এখানকার মানুষ অতিথিপরায়ণ। খুব মিশুক। মানুষ সময় অনেক অপচয় করে। 

স্কুলের উদ্যোক্তা তারিক উল ইসলাম মজুমদার বলেন, জাপানে কিছু বন্ধু রয়েছে। তারা একবার কুমিল্লায় বেড়াতে আসেন। তারা কান্দিরপাড়ে কিছু ভিক্ষুককে অনেক টাকা দিতে থাকেন। বিষয়টি আমার স্ত্রী নাহিদা আক্তার মজুমদারের নজরে আসে। তিনি বলেন, এভাবে তো মানুষের উপকার হবে না। পাহাড়ের শিক্ষার আলো জ্বালাতে কাজ করা যেতে পারে। এর নিরিখে আমরা তাদের প্রস্তাব দিই। তোশিকো ওনিশিসহ তার সহপাঠীরা স্কুলের ব্যয়ভার বহনে সহযোগিতা করেন। প্রতি জানুয়ারি মাসে এসে তারা স্পোর্টস ডে করেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা প্রাথমিকের সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হাইকোর্টে স্থগিত - dainik shiksha প্রাথমিকের সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হাইকোর্টে স্থগিত আন্দোলন স্থগিত তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের, ৭ দিনের মধ্যে কমিটি - dainik shiksha আন্দোলন স্থগিত তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের, ৭ দিনের মধ্যে কমিটি পাঠ্যবই নির্ভুল করা হচ্ছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha পাঠ্যবই নির্ভুল করা হচ্ছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফের নির্দেশ ইউজিসির - dainik shiksha আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফের নির্দেশ ইউজিসির কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে পদত্যাগ করেছেন সেই তিন বিতর্কিত বিচারপতি - dainik shiksha পদত্যাগ করেছেন সেই তিন বিতর্কিত বিচারপতি কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বিচার হওয়া উচিত: সলিমুল্লাহ খান - dainik shiksha ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বিচার হওয়া উচিত: সলিমুল্লাহ খান বিচারকের সামনে যে হুমকি দিলেন কামরুল - dainik shiksha বিচারকের সামনে যে হুমকি দিলেন কামরুল please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.003817081451416