দৈনিকশিক্ষাডটকম, মানিকগঞ্জ: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-২ আসনে নৌকার টিকিট পেয়েও স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলুর কাছে হেরেছেন কণ্ঠশিল্পী ও গত তিনবারের এমপি মমতাজ বেগম। টুলু পেয়েছেন ৮৮ হাজার ৩০৯ ভোট। মমতাজ পেয়েছেন ৮২ হাজার ১৩৮ ভোট। মমতাজের হেরে যাওয়ার নেপথ্যে অনেক কারণ সামনে চলে এসেছে।
ভোটার ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মমতাজের পরাজয়ের নেপথ্যে রয়েছে নানা কারণ। এর মধ্যে তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন, কমিটি গঠনে স্বেচ্ছাচারিতা, আত্মীয়করণ ও পদ বাণিজ্য, নৌকা প্রতীকের নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যানদের অসম্মান, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম মহিউদ্দিনকে কটাক্ষ করে বক্তব্য প্রদানসহ বিতর্কিত ব্যক্তিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া এবং দীর্ঘ ১৫ বছরে কাক্সিক্ষত উন্নয়ন না করা। তার প্রয়াত বাবা মধু বয়াতির প্রথম স্ত্রী ও তিন কন্যার প্রতি অবিচারের ঘটনায় মমতাজকে পড়তে হয় বেকায়দায়। তারা মমতাজের পক্ষ ত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী টুলুকে সমর্থন দেন।
এ ছাড়া নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় মমতাজ ও তার অনুসারীদের সভা-সমাবেশে দেওয়া আক্রমণাত্মক বক্তব্য ও বেসামাল কথাবার্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় ফলাফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে বলেও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
এদিকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন না পাওয়া ট্রাক প্রতীকের নব নির্বাচিত এমপি (স্বতন্ত্র) শিল্পপতি দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু বিগত প্রায় ১৫ বছর ধরে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকা-ের মাধ্যমে মানিকগঞ্জ-২ নির্বাচনী এলাকার মাঠে অবস্থান করে আসছিলেন।
তিনি গৃহহীনদের বাসস্থান, বেকারদের কর্মসংস্থান, অসহায়দের চিকিৎসাসেবাসহ বিভিন্ন সামাজিক, ধর্মীয়, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ ও দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের দলীয় বিভিন্ন কর্মকান্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখায় জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটিতে পেয়ে যান অর্থ সম্পাদক পদ। অন্যদিকে নির্বাচনী আসনের বেশিরভাগ ইউপি চেয়ারম্যান, পৌরসভার কাউন্সিলরসহ আওয়ামী লীগের একটা বড় অংশ ছিলেন তার সঙ্গে।মমতাজ বেগম ২০০৮ সালে সংরক্ষিত মহিলা আসনে, ২০১৪ সালে নৌকার টিকিট পেয়ে মানিকগঞ্জ-২ আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ও ২০১৮ সালে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি নির্বাচিত হন। এবার অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে মমতাজের পরাজয় ঘটে।