প্রয়োজন অনুযায়ী শ্রেণিকক্ষ নেই, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ আর শিক্ষক স্বল্পতা নিয়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে ঝালকাঠি সদর উপজেলার উত্তম নগর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার পাঠদান কার্যক্রম। মাদরাসিাটির শিক্ষার্থী সংখ্যা ২২৫ জন। ছাত্র ১২০ ও ছাত্রী ১০৫ জন। শিক্ষার্থী উপস্থিতি ৭০ এর নিচে। এই মাদরাসার ১৭টি পদের বিপরীতে শিক্ষক রয়েছেন ১২ জন এবং কর্মচারী ৪ জনের পরিবর্তে রয়েছেন একজন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে জেলার সদর উপজেলার বিনয়কাঠি ইউনিয়নের উত্তম নগর গ্রামে মাদরাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। শুরু থেকেই মাদরাসার লেখাপড়ার মান ভালো বলে জানান এলাকাবাসী। কিন্তু শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষক কম থাকায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষার মান কমছে বলে জানান তারা।
উত্তম নগর এলাকার বাসিন্দা হাসান মাহমুদ বলেন, আমার ভাইয়ের ছেলেকে ভর্তি করাতে এসে জানলাম মাদরাসাটিতে একডেমিক ভবন ও শিক্ষক সংকট রয়েছে। টিনশেডের ভবনটিতে নেই বৈদ্যুতিক পাখা, কষ্ট করে ক্লাস করতে হয় শিক্ষার্থীদের। তবু ভর্তি করিয়েছি। ভবন ও শিক্ষক সংকটের বিষয়টি সমাধান করা জরুরি।
ভবন ও শিক্ষক সংকটের কথা জানিয়ে মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মো. আবুল বাসার বলেন, আমরা নতুন ভবনের জন্য চেষ্টা করছি। সংসদ সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং শিক্ষকের বিষয়টি এনটিআরসিএ দেখবে, আমরা চাহিদা দিচ্ছি।
শিক্ষার্থী কম থাকার কারণ জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত সুপার বলেন, আমাদের মাদরাসার আশেপাশে অনেক নূরানি ও হাফেজি মাদরাসা থাকায় শিক্ষার্থী কম। শিক্ষার্থীরা দাখিলের আগে আমাদের এখানে এসে পড়াশোনা করে পরীক্ষা দেন। তা ছাড়া চাহিদার তুলনায় শিক্ষক কম, ভবন না থাকা আবার যা আছে তাও জরাজীর্ণ অবস্থায়। টিনশেড ভবনে বৈদ্যুতিক পাখার ব্যবস্থা নেই। এইসব কারণে শিক্ষার্থী কম। বিদ্যালয়ের সীমানাপ্রাচীর না থাকায় নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে শিক্ষার্থীরা। ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই, মাঠের সঙ্গেই একটি খাল রয়েছে যার কারণে একটু বৃষ্টি হলে বা খাল-নদীতে পানি বাড়লে মাঠে পানি জমায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হয়, যোগ করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, মাদরাসাটিতে খালি পড়ে আছে সুপার, বিএসসি গণিত, ইংরেজি, কম্পিউটার ও শরীর চর্চা শিক্ষকের পদ।
মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. নাসির হাওলাদার মারা যাওয়ায় পদাধিকার বলে বর্তমান সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুজা মন্ডল এবং বর্তমান কমিটির মেয়াদও শেষের দিকে তাই নতুন কমিটির জন্য প্রক্রিয়া চলছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. একেএম হারুন অর রশীদ বলেন, মাদরাসাটিতে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য নতুন একটি ভবন ও গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বিষয়ের শিক্ষক খুবই জরুরি।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুনিল চন্দ্র সেন বলেন, মাদরাসার ভবন ও শিক্ষক সংকটের বিষয়টি জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় তুলে ধরবো।