খোসাসহ শসা খেলে যে উপকার পাবেন

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

প্রতিদিনের খাবারে সালাদ হিসেবেই শসার ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। তবে খাবারের সাথে অনুষঙ্গ হিসেবে শসার কদর বেশি হলেও পুষ্টিগুণের দিক দিয়ে শসা মোটেও পিছিয়ে নেই। শসা সবচেয়ে স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য উপাদান। সবজি হিসেবে ভাবা হলেও শসা আসলে একটি ফল।

এটি উপকারী পুষ্টিতে উচ্চ গুণমান থাকায় এটিকে ফলের আসনে গুরুত্ব দেয়া হয়। নির্দিষ্ট উদ্ভিদ যৌগ থাকায় ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্টের কারণে চিকিৎসা এবং প্রতিরোধ বিষয়ে শসাকে আদর্শ হিসেবে গণ্য করা হয়। শসাতে ক্যালরি কম থাকে এবং এতে প্রচুর পরিমাণে পানি ও দ্রবণীয় ফাইবার থাকে; যা দেহকে হাইড্রেডেট রাখে, ফলে পানিশূন্যতা থেকে মুক্তি দেয়।

পুষ্টিবিদ ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় রাখতে শসা হতে পারে উপকারী খাদ্য। এটি প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে এবং শরীরকে ঠান্ডা রাখে। এছাড়াও যারা ওজন কমাতে চান, তারা শসা খেতে পারেন। শরীরের ওজন হ্রাস করতে এর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। এ ছাড়া শসায় পানির পরিমাণ অনেকটাই বেশি। ফলে নিয়মিত শসা খেলে শরীরে পানির ঘাটতি অনেকটাই পূরণ হবে। তাই সুস্থ থাকতে হলে শসা খাওয়া ছাড়া যাবে না।

শসার উপকারিতা সম্পর্কে কমবেশি সবার ধারণা থাকলেও, অনেকেই জানেন না শসার খোসার উপকারিতা সম্পর্কে। ভ্রান্ত ধারণার ফলে অনেকেই ভাবেন শসার খোসা ক্ষতিকর। যে কারণে সালাদ কিংবা রান্নায় ব্যবহারের আগে শসার খোসা ফেলে দেন। অথচ বাস্তবচিত্র একেবারেই উল্টো। শসার মতোই দারুণ স্বাস্থ্যকর ও উপকারী শসার খোসাও। তাই শসা খেতে হবে খোসাসহ।

শরীরে পানিশূন্যতা কমায়: পানি আপনার শরীরকে কার্যকর রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পানি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং বর্জ্য ও পুষ্টি পরিবহনের মতো প্রক্রিয়াগুলোর সঙ্গে জড়িত থাকে। শরীরে পানির সঠিক মাত্রা শারীরিক কর্মক্ষমতা থেকে বিপাক পর্যন্ত সবকিছুকে প্রভাবিত করতে পারে। আপনি পানি বা অন্যান্য তরল যেমন জুস বা চা দ্বারা আপনার তরল চাহিদার পূরণ করেন তখন আপনি পানি বহনের জন্য কতটুকু পানি পান করবেন, তার একটি মাত্রা থাকে। কিছু মানুষ তাদের মোট পানি গ্রহণের ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বিভিন্ন খাবার থেকে পেতে পারে। যেহেতু শসা প্রায় ৯৬ শতাংশ পানি দ্বারা গঠিত, তাই শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে বিশেষভাবে কার্যকর এবং প্রাত্যহিক চাহিদা অনুযায়ী পানি পান না করেও দিনে একটি বা দুটি শসা খেয়ে প্রতিদিনের তরল চাহিদা মেটানো সম্ভব।

চোখের সমস্যা দূর করে: দারুণ এ বিষয়টি সম্পর্কে খুব কম মানুষই অবগত। শসার খোসা হলো ভিটামিন-এ-এর (বেটা-ক্যারটিন) বড় উৎস। চোখের স্বাস্থ্য ও দৃষ্টিশক্তির জন্য ভিটামিন-এ ভীষণ জরুরি। তবে শসার খোসা ফেলে দিলে ভিটামিন-এ আর অবশিষ্ট থাকে না।

কোষ্ঠকাঠিন্য ও পেটের সমস্যা কমায়: বিব্রতকর এ সমস্যার ক্ষেত্রে ত্রাতা হিসেবে কাজ করবে খোসাসহ শসা। শসার খোসাতে রয়েছে অদ্রবণীয় আঁশ। অন্যদিকে শসার ভেতরের নরম অংশে থাকে দ্রবণীয় আঁশ। উভয় প্রকৃতির আঁশ মলকে নরম করতে ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা কমাতে চমৎকার কার্যকরি।

মেদ ও চর্বি কমাবে: হুটহাট ক্ষুধাভাব খুব জ্বালায়। এ সময় অস্বাস্থ্যকর কোন খাবার খাওয়ার পরিবর্তে কয়েক টুকরা খোসাসহ শসা খেয়ে ফেলতে হবে। খোসাসহ শসায় কোনো ক্যালরি নেই বললেই চলে। ক্যালরি কম হলেও ক্ষুধার প্রকোপ কমাতে শসা বেশ কার্যকর। তাই ক্ষুধা পেলেই নিশ্চিন্তে খেয়ে নিতে হবে ছোট একটি খোসাসহ শসা।

ভিটামিন ‘কে’-এর অন্যতম উৎস: রক্ত জমাট বাঁধতে ভিটামিন ‘কে’ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। যা পাওয়া যাবে শসার খোসাতে। এছাড়াও ভিটামিন ‘কে’ হাড়ের পুষ্টিতে, মগজের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে ও নির্দিষ্ট ধরণের কিছু ক্যানসারর প্রতিরোধে সহায়তা করে থাকে।

ত্বকে বয়সের ছাপ পড়া রোধ করে: ত্বকের জন্য ভিটামিন-সি অনন্য। ক্ষতিকর অক্সিডেটিভ ড্যামেজ থেকে ত্বককে রক্ষা করতে এবং ত্বকে বয়সের ছাপ পড়া প্রতিরোধে যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও কোলাজেন উৎপাদনে অনুঘটক হিসেবে কাজ করে অ্যাসকরবিক অ্যাসিড। শসাতে নয়, শসার খোসায় প্রচুর পরিমাণে উপকারী এ উপাদান বিদ্যমান থাকে। তাই খোসাসহ শসা খেলে ত্বকের বয়সের ছাপকে দূরে রাখা সম্ভব হবে।

তবে খেয়াল রাখতে হবে, খাওয়ার পূর্বে শসাকে অবশ্যই এক ঘণ্টা লবণ-পানির মিশ্রনে ডুবিয়ে রাখতে হবে। এতে শসার খোসায় লেগে থাকা জীবাণু, রাসায়নিক ও ফরমালিন দূর হয়ে যাবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ঢাকা বোর্ডে জিপিএ-৫ বেড়েছে ২০০ - dainik shiksha ঢাকা বোর্ডে জিপিএ-৫ বেড়েছে ২০০ ‘আহতদের আমৃত্যু চিকিৎসা ও পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে’ - dainik shiksha ‘আহতদের আমৃত্যু চিকিৎসা ও পূনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে’ ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা জোরদার করার পরামর্শ ইউজিসির - dainik shiksha ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা জোরদার করার পরামর্শ ইউজিসির পুরনো পদ্ধতিতে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা - dainik shiksha পুরনো পদ্ধতিতে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক জাবির প্রশাসনিক ভবন থেকে ‘শেখ মুজিবের’ ছবি অপসারণ - dainik shiksha জাবির প্রশাসনিক ভবন থেকে ‘শেখ মুজিবের’ ছবি অপসারণ ইএফটি সংক্রান্ত নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha ইএফটি সংক্রান্ত নতুন নির্দেশনা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন - dainik shiksha এসএসসি ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দের ফরম পূরণের পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি দেখুন দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0021779537200928