গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর বাবার নামের কলেজে নানা অনিয়ম!

দৈনিক শিক্ষাডটকম, গাজীপুর |

গাজীপুরের শ্রীপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী সরকারি কলেজে আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে বাধ্যতামূলক কোচিং ফি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। বিনা রসিদে বিশেষ ক্লাসের নামে কোচিং বাণিজ্যের এ অভিযোগ করেছেন খোদ অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরাই।

সম্প্রতি এ সব অভিযোগ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় শিক্ষানুরাগীরা। জানা গেছে, যে হারে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোচিংয়ের জন্য টাকা নেয়া হয়েছে এখন সেই কোচিং ক্লাসেও ৩০ ভাগ শিক্ষার্থী উপস্থিতি নেই। চূড়ান্ত পরীক্ষার আগেভাগেতড়িঘড়ি করে মূলত বাণিজ্য করার উদ্দেশেই এসব করা হয়েছে বলে দাবি করেন ভুক্তভোগীরা।

 

শিক্ষার্থীরা জানান, বিজ্ঞান বিভাগের পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, ইংরেজি, আইসিটি, ব্যবসায় শিক্ষা শাখার হিসাববিজ্ঞান, ইংরেজি, আইসিটি এবং মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ইংরেজি ও আইসিটি প্রতি বিষয়ে ১ হাজার এবং কোচিং পরীক্ষার নামে ২’শ করে টাকা নেয়া হয়েছে। 

কোচিং ফি ছাড়া এসব পরীক্ষায় (নির্বাচনী) অনুত্তীর্ণ কোনো শিক্ষার্থীকে ফরম পূরণের সুযোগ দেয়া হয়নি। একটি সরকারি কলেজে বিধিবহির্ভূতভাবে এসব অর্থ আদায়ে অভিভাবক মহলে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। 

কিছু বিষয় নিয়ে এলাকাবাসী ও অভিভাবকদের পক্ষ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগও করা হয়েছে। সাংবাদিকদের কাছে দেয়া অভিযোগটির অনুলিপিতে দেখা গেছে, ২৫ এপ্রিল ৫১৭ নং ক্রমিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের রিসিভিং সিলসহ উল্লেখ রয়েছে।

অভিযোগের বিবরণ, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আসন্ন এইচএসসি নির্বাচনী পরীক্ষায় পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, ইংরেজি, আইসিটি, হিসাববিজ্ঞান বিষয়গুলোর বেশিরভাগ শিক্ষার্থীদের ফেল দেখিয়ে ফলাফল প্রকাশ করা হয়। কাউকে ১টি আবার কাউকে ২ বা ৩টি বিষয়ে ফেল করানো হয়। 

শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিনা রসিদে কোচিং ক্লাসের জন্য বিষয় প্রতি ১ হাজার টাকা কোচিং ফি আদায় করা হয়। এভাবে কমপক্ষে ৬ লাখ টাকা কোচিং ফি বাবদ রসিদ ছাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। কোচিং ফি দেয়া ওইসব শিক্ষার্থীরা পরে ফরম পূরণের সুযোগ পান।

অভিভাবকেরা জানায়, একটি সরকারি কলেজে কোচিং ক্লাসের নামে এভাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায় পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকে যেমন প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, তেমনি অনেক অভিভাবক ওই টাকা পরিশোধ করতে হিমশিম খেয়েছেন। 

তারা দাবি করেন, কোনো বেরসকারি কলেজেও এমনভাবে কোচিংয়ের নামে টাকা নেয়া হয়না। নির্বাচনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হননি এরকম ৩’শ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অনুত্তীর্ণের প্রকারভেদে ২’শ এবং ৩’শ করে টাকা আদায়ের মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পরে ওইসব বিষয়ে ফেল করা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আবারো বিষয়প্রতি ১’শ টাকা করে ফি নিয়ে একাধিকবার পরীক্ষা নেয়া হয়। 

এইচএসসি নির্বাচনী পরীক্ষার দায়িত্বে ছিলেন প্রভাষক ওয়ালিউল্লাহ। পরে পুন:পরীক্ষার দায়িত্বে ছিলেন প্রভাষক আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে ৪-৫জন শিক্ষক। ওইসব শিক্ষক ফরম পূরণে ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিনা রসিদে টাকা আদায় করেন।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানায়, কোচিং ফি নেয়ার আগে তাদেরকে একটি চুক্তিপত্রে সই নিয়ে হাতে হাতে বিষয় প্রতি ১ হাজার ও কোচিং পরীক্ষা ফি বাবদ ২’শ টাকা করে নিয়ে তারপর ফরম পূরণের সুযোগ দেয়া হয়। প্রভাষক আবুল কালাম আজাদ, আওলাদ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান শামীমসহ কয়েকজন শিক্ষক এ কাজে নিয়োজিত ছিলন। তবে কলেজটির অধ্যক্ষ প্রফেসর পিয়ারা নার্গিস কোচিং ক্লাসের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। 

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস - dainik shiksha যারা আপনাদের সেবা করবে তাদের ভোট দেবেন: সারজিস মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক - dainik shiksha মাদরাসায় অনুপস্থিত থেকেও ১১ মাসের বেতন তুলেছেন শিক্ষক এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি - dainik shiksha এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! - dainik shiksha সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক - dainik shiksha ৬৬ জন ছাত্রকে পাঁচচুলো করলেন শিক্ষক শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকারের নতুন পদক্ষেপ - dainik shiksha শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকারের নতুন পদক্ষেপ প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের তদন্ত নিয়ে সিআইডি ও পিএসসি মুখোমুখি দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0050170421600342