আমাদের বার্তা প্রতিবেদক: দেশের জিডিপির তুলনায় মাথাপিছু গবেষণা ব্যয় এখনো তলানিতে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, দেশে গবেষণা ও মান উন্নয়ন কার্যক্রমে বছরে মাথাপিছু আনুমানিক ব্যয় (জিইআরডি) প্রায় ৬২০ টাকা। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় এই ব্যয় মাত্র শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ। আর সর্বনিম্ন ব্যয় মৌলিক গবেষণাকাজে, সবচেয়ে বেশি পরীক্ষামূলক উন্নয়নে।
সম্প্রতি প্রকাশিত বিবিএস গবেষণা ও উন্নয়ন (আরঅ্যান্ডডি) জরিপ ২০২২ অনুযায়ী, দেশে প্রতি ১০ লাখ মানুষের বিপরীতে গবেষক আছেন ১০৭ জন। মোট গবেষকের মধ্যে মাত্র ১০ দশমিক ৮২ শতাংশ নারী।
জিইআরডি দিয়ে গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রমে একটি দেশের ব্যয় করা মোট অর্থকে বোঝায়। এটি গবেষণা ও উন্নয়নে একটি দেশের আগ্রহ, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে দেশের সামগ্রিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা মূল্যায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক।
আরঅ্যান্ডডি জরিপে ২০২০–২১ ও তার আগের দুই অর্থবছরের তথ্য পর্যালোচনা করা হয়েছে। চারটি খাতের সরকারি–বেসরকারি ৪৯৭টি প্রতিষ্ঠানের তথ্যের ভিত্তিতে এ জরিপ করা হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১০৮টি, সরকারি প্রতিষ্ঠান ৯৫টি, বেসরকারি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ৪১টি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে ২৫৩টি।
জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০–২১ অর্থবছরে এসব প্রতিষ্ঠানে মোট গবেষক ছিলেন ১৮ হাজার ২৫ জন। তবে পূর্ণকালীন গবেষকের সংখ্যা আরও কম, ১২ হাজার ৭৯৮ জন। সে হিসাবে দেশে প্রতি ১০ লাখ মানুষের বিপরীতে পূর্ণকালীন গবেষক রয়েছেন মাত্র ৭৬ জন।
বিবিএসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গবেষণায় বাংলাদেশে যত অর্থ খরচ হয় তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি খরচ হয় কৃষিবিজ্ঞান খাতে। খরচের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, তৃতীয় অবস্থানে প্রকৌশল ও প্রযুক্তি খাত। চতুর্থ অবস্থানে চিকিৎসাবিজ্ঞানের গবেষণা, এ খাতে ব্যয় হয় মোট খরচের ১২ শতাংশ অর্থ।
প্রতিবেদনে গবেষকদের লিঙ্গ ও বয়সভিত্তিক সংখ্যা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, খাতভিত্তিক গবেষকের সংখ্যা ও খাতভিত্তিক গবেষণা ব্যয়ের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তাতে দেখা যায়, ২৫ থেকে ৩৪ বছর বয়সী গবেষকের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, এ হার প্রায় সাড়ে ৩৬ শতাংশ। এরপরে অবস্থান ৩৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী গবেষকের। অন্যদিকে প্রায় অর্ধেক সংখ্যক গবেষক তাদের সর্বোচ্চ শিক্ষাস্তর হিসেবে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন।
বিবিএস জানিয়েছে, দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সবচেয়ে বেশি গবেষণা হয়; সেখানে গবেষকের সংখ্যাও বেশি। উচ্চশিক্ষা খাতে গবেষকের সংখ্যা প্রতিবছর বাড়ছে। অন্যদিকে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রেও গবেষকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেমন ২০১৮–১৯ খ্রিষ্টাব্দে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে পূর্ণকালীন গবেষকের হার ছিল ২৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ, যা দুই অর্থবছর পরে বেড়ে দাঁড়ায় ২৯ দশমিক ৪৪ শতাংশে।
আরঅ্যান্ডডি জরিপ বলছে, ২০২০–২১ অর্থবছরে গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে মোট ব্যয় হয় ১০ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা (জরিপকৃত প্রতিষ্ঠানগুলোতে)। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করেছে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো। মোট ব্যয়ের ৪৭ শতাংশ। এরপরে গবেষণায় ব্যয় করে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো। আর উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যয় সে তুলনায় খুবই কম।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষা ডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষা ডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।