গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে নিজস্ব ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতিতে ফিরতে চায় খুবি

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা থেকে বের হয়ে নিজস্ব ভর্তি পদ্ধতিতে ফেরার দাবি তুলেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) সব স্কুলের ডিন ও সব ডিসিপ্লিন প্রধানরা।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় তারা এ দাবি তোলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম। 

সভায় বক্তারা বলেন, গুচ্ছ একটি জটিল, অস্বচ্ছ এবং বৈষম্যমূলক পদ্ধতি। এ পদ্ধতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তার স্বকীয়তা হারাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একক একাডেমিক ক্যালেন্ডারে পরিচালিত হতে পারছে না। প্রতিটি শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের টার্মের সময় সংকুচিত করতে হচ্ছে ও অন্যান্য টার্মের সময় বাড়াতে হচ্ছে, যা আন্ডারগ্রাজুয়েট অর্ডিন্যান্সের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং কোয়ালিটি এডুকেশন নিশ্চিতকরণে বাধা সৃষ্টি করছে। এর কারণে একই সেশনে পাঁচটি ব্যাচের ক্লাস থাকায় প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি হচ্ছে এবং শিক্ষক সংকট ও অবকাঠামো সংকটের প্রেক্ষাপটে সমস্যা ঘনীভূত হচ্ছে।

বাড়তি ব্যাচ থাকার কারণে শিক্ষকদের কাজের চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং টার্ম ব্রেক না থাকায় তাদের প্রফেশনালস্, রিসার্চ এবং ব্যক্তিগত প্ল্যান ব্যাহত হচ্ছে। এর পাশাপাশি গুচ্ছের কারণে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রণীত ওবিই কারিকুলার সঠিক বাস্তবায়ন হচ্ছে না। এ পদ্ধতির কারণে নিজস্ব প্রশ্ন কাঠামোতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া যাচ্ছে না বলে মেধাবী শিক্ষার্থীদের যাচাইয়ের সুযোগ কমে যাচ্ছে। এছাড়াও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিকৃত প্রতিটি ব্যাচে সিট ফাঁকা থাকছে, যার হার পূর্ববর্তী সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে বৈচিত্র্য কমছে। 

বক্তারা আরও বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত শিক্ষার্থীদের অন্যতম দাবি গুচ্ছ পদ্ধতির বিলোপ। তাই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্বতা ধরে রাখতে এবং শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সমর্থন রেখে গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে এসে এককভাবে নিজস্ব ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের উদ্যোগ নিতে উপাচার্যের প্রতি দাবি জানান শিক্ষকরা। সভায় উপস্থিত শিক্ষকরা উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহণের একমাস পূর্তিতে তাকে অভিবাদন জানান এবং তার কর্ম মেয়াদের সাফল্য কামনা করেন। 

সভায় উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা সুনাম আছে। এই সুনাম ও ভাবমূর্তি আমাদের ধরে রাখতে হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজস্ব আইন অনুযায়ী চলবে। শিক্ষার্থীরা ইতঃপূর্বে গুচ্ছ থেকে বের হয়ে আসার দাবি তুলেছেন। আজ শিক্ষকরাও একই দাবি করলেন। আমিও এই দাবির প্রতি সমর্থন রেখে গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে এসে নিজস্ব ভর্তি পরীক্ষা পদ্ধতিতে ফিরতে চাই। শীঘ্রই এ বিষয়ে আমরা গুচ্ছ কমিটি ও ইউজিসির সঙ্গে আলোচনা করে একটা ইতিবাচক সিদ্ধান্তে পৌঁছাবো বলে আশা করি। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা কামনা করছি।

সভায় বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. আশরাফুল আলম, জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. আবুল কালাম আজাদ, ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. নূর আলম, সামাজিক বিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. আব্দুল্লাহ আবুসাঈদ খান, কলা ও মানবিক স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. শাহজাহান কবীর, আইন স্কুলের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মো. নাসিফ আহসান, চারুকলা স্কুলের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. শেখ সিরাজুল হাকিম, শিক্ষা স্কুলের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মো. ইমদাদুল হক এবং বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের প্রধান, বিভাগীয় পরিচালকরা উপস্থিত থেকে মতামত ব্যক্ত করেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
‘বারাসাত ব্যারিকেড’ ঘোষণা তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ‘বারাসাত ব্যারিকেড’ ঘোষণা তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের রাতারাতি সরকারি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করা সম্ভব না - dainik shiksha রাতারাতি সরকারি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করা সম্ভব না মনোনীত হয়েও বৃত্তি থেকে বঞ্চিত রাবির ৯ শতাধিক শিক্ষার্থী - dainik shiksha মনোনীত হয়েও বৃত্তি থেকে বঞ্চিত রাবির ৯ শতাধিক শিক্ষার্থী পাঠ্যবই নির্ভুল করা হচ্ছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha পাঠ্যবই নির্ভুল করা হচ্ছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা আবু সাঈদ হত্যা মামলায় গ্রেফতার বেরোবির সাবেক প্রক্টর - dainik shiksha আবু সাঈদ হত্যা মামলায় গ্রেফতার বেরোবির সাবেক প্রক্টর কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে মাদরাসা-ই-আলিয়ার ভবনে অস্থায়ী আদালত বন্ধের দাবি - dainik shiksha মাদরাসা-ই-আলিয়ার ভবনে অস্থায়ী আদালত বন্ধের দাবি কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি নিয়ে নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি নিয়ে নতুন নির্দেশনা বিচারকের সামনে যে হুমকি দিলেন কামরুল - dainik shiksha বিচারকের সামনে যে হুমকি দিলেন কামরুল please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027880668640137