তৃতীয়বারের মতো চলতি মাসেই শুরু হচ্ছে গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কার্যক্রম। এবার এই পদ্ধতিতে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিমত পোষণ করলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আলোচনা সভায় জোরালো আওয়াজ তোলেনি কেউ। ফলে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। এতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির সম্মিলিত সিদ্ধান্তক্রমে ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতেই ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত হচ্ছে না নতুন কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।
জানা যায়, গত বছর ২২টি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা। তবে এতে নানা ত্রুটি ও অব্যবস্থাপনা দেখা দেয়। ফলে ভোগান্তি পোহাতে হয় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের। পাশাপাশি নিজস্ব স্বকীয়তা ধরে রাখতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ও ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষক সমিতি এ পদ্ধতি থেকে বের হয়ে আসার দাবি জানায়।
জবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার কারণে আমরা স্বকীয়তা হারাচ্ছি। মাত্র কয়েকটি আসন পূরণ করতে ১০টির বেশি মেধা তালিকা দেওয়া লাগে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের দ্বিমতের কারণে গুচ্ছতে জবি থাকবে কিনা এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আগামী বুধবার জবির সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
ইবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে আমরা সমস্যার কথা বলেছি। টেকনিক্যাল ত্রুটি ও অগোছালো প্রক্রিয়ার বিষয়টি সমাধান করতে হবে। নিজস্ব প্রক্রিয়ায় ফিরতে আমরা উপাচার্যের কাছে চিঠিও দিয়েছি।
গুচ্ছ ভর্তি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বলেন, সবকিছু ঠিক থাকলে এ মাসেই গুচ্ছ ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে। জুলাইয়ের শুরুতেই নতুন শিক্ষাবর্ষের ক্লাস শুরু হবে। ত্রুটিগুলো চিহ্নিত করে একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় ভর্তি কার্যক্রম চলবে। প্রয়োজনে টেকনিক্যাল বিষয়গুলো আরও সমৃদ্ধ করা হবে।
এবার গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়ায় ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ভর্তি কার্যক্রম শুরুর আবেদন জানিয়েছে পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) নতুন তিন বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে অনুমোদন দেয়নি।
পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী সাইফুদ্দীন বলেন, নতুন শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য আবেদন করা হয়েছিল। এখনও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
বাজেট জটিলতা ও দুর্বল অবকাঠামোর কারণে এ বছর ওই তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে না বলে জানান ইউজিসি সদস্য ড. দিল আফরোজা। তিনি বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষার সমস্যাগুলো সমাধান করার চেষ্টা চলছে। একটি সুন্দর প্রক্রিয়ায় গুচ্ছ ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।