ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) সিনেটের বার্ষিক অধিবেশনে গেস্টরুম কালচার প্রসঙ্গ তোলেন বিএনপি-জামায়তপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান। এতে হট্টগোল সৃষ্টি হয়। পরে গেস্টরুম নির্যাতন অংশটি প্রত্যাহার করে নিলে সাদা দলের কয়েকজন শিক্ষক ওয়াকআউট বা অধিবেশন বর্জন করেন।
বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে সিনেট অধিবেশনে সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান তার বক্তব্যে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ কর্তৃক ছাত্রদলের ওপর হামলা ও বিরোধীমত দমনের প্রতিবাদ জানিয়ে সিনেট সভাপতি ও উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। একইসঙ্গে তিনি আবাসিক হলগুলোতে ‘গেস্টরুম নির্যাতন’ প্রসঙ্গ উপস্থাপন করেন।
এরপর পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান আওয়ামী লীগপন্থি নীল দলের কয়েকজন শিক্ষক। তাদের দাবি, ঢাবিতে গেস্টরুম নির্যাতন নেই বরং বিএনপির আমল থেকে বর্তমান পরিবেশ ভালো। এসময় তাদের একজন বলেন, এ ধরনের শব্দ সিনেটের অধিবেশনে সঙ্গে যায় না।
পরিপ্রেক্ষিতে এমন শব্দের সঙ্গে আমরা পরিচিত নয় উল্লেখ করে উপাচার্য বক্তব্যের ওই অংশটি প্রত্যাহার করেন। সাদা দলের সিনেট সদস্য অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, এটা আমাদের মনগড়া বক্তব্য নয়, পত্রিকায় নিয়মিত বিষয়গুলো আসছে।
এ সময় উপাচার্য পত্রিকার রেফারেন্স টানার প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেন।
এক্সপাঞ্জ করার প্রতিবাদে সাদা দলের শিক্ষক নেতারা অধিবেশন কক্ষ থেকে ওয়াকআউট করেন। পরে নীল দলের শিক্ষকরা থাকার অনুরোধ জানালেও তারা ফেরেননি।
কক্ষ থেকে বের হয়ে অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, আমার বক্তব্য উপাচার্য আরেকজন সদস্যের অনুরোধে ‘এক্সপাঞ্জ’ করেছেন। আমি কোনো অসত্য বক্তব্য দেইনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘গেস্টরুম কালচার’ রয়েছে। সব দল মতের ছাত্ররা একইসাথে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না। এটি কোনো অসত্য বক্তব্য নয়। সেটি ‘এক্সপাঞ্জ’ করায় আমি ওয়াকআউট করেছি।
অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, উপাচার্য অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করছেন না। তিনি কোনো ভূমিকা রাখছেন না এবং একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছেন। তিনি পত্রিকার রেফারেন্স মানবেন না কেন, আমরা কি সবসময় সবকিছু নিজ চোখেই দেখি?
জানা যায়, বুধবার (২১ জুন) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেটের বার্ষিক অধিবেশন শুরু হয়। এতে সাদাদলের তিন শিক্ষক অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান ও অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ শিক্ষক প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেন।
অধিবেশনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদসহ সিনেট সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।