গোঁজামিল দিয়ে তৈরি করা জ্যেষ্ঠতার তালিকা দিয়ে এবং মেধাকে পাশ কাটিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন পদে পদোন্নতি দেওয়ার সব ব্যবস্থা প্রায় চূড়ান্ত করার অভিযোগ উঠেছে। যেসব মানহীন ও কালো তালিকাভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সনদ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও এবং পদোন্নতিতে নিষিদ্ধ সেই সব প্রতিষ্ঠানের সনদেই অধিদপ্তরের ১৩ ও ১৪ গ্রেডে কর্মরত শ খানেক জনবলকে দশম গ্রেডে পদোন্নতি দেওয়া হচেছ। পদোন্নতি পেয়ে তারা সহকারি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা হবেন। গত দুই সপ্তাহে নেওয়া এমন উদ্যোগ সফল হলে কমপক্ষে ৭০০ জনবলের পদোন্নতি বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এহেন উদ্যোগের খবর পেয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদের কাছে আবেদন করা হয়েছে। আবেদনে সহকারি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তার জ্যেষ্ঠতার তালিকা যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। পদোন্নতির অন্যায় উদ্যোগ বন্ধ করে ন্যায্যতা দাবি করে সেনবাগ সরকারি কলেজের প্রধান সহকারি সৈয়দ লিয়াকত আলীসহ অনেকেই আবেদন করেছেন।
বুধবার (৪ আগস্ট) জমা দেওয়া আবেদনে বলা হয়েছে, ‘জ্যেষ্ঠতা ও পদোন্নতির বিধিমালা ২০১১-এর ৪এর ১ (খ) মোতাবেক মেধাক্রম লঙ্ঘন করা হয়েছে। একই বিধিমালার ৪ এর ২ ধারা মোতাবেক বিভিন্ন পদের সমন্বিত জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শ্রেণির প্রারম্ভিক পদের নিয়মিত যোগদানের তারিখের ভিত্তিতে সমন্বিত জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করা হয়নি।
আবেদনকারী জানান, এহেন অবৈধ কাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ যাদের বিরুদ্ধে তারা হলেন- বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) পরিচালক মাহফুজুর রহমান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বিতর্কিত ও ইতোপূর্বে ঘুষকাণ্ডে অভিযুক্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা আবু আলম, মাউশি অধিদপ্তর থেকে সদ্য অনত্র বদলি হওয়া হিসাব রক্ষক কাজী মহসিন এবং ঢাকা মহা নগরের দারুস সালাম উচ্চ বিদ্যালয়ের উচ্চমান সহকারি নজমুল হোসেন। তবে, আবু আলম ও নজমুল হোসেন তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
যেভাবে মেধাকে পাশ কাটানো হচ্ছে
বন্ধ হয়ে যাওয়া বেসরকারি দি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, দারুল ইহসানসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থেকে বিএড ও মাস্টার্স সনদ কিনে পদোন্নতি বাগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের একজন পরিচালক দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠানের সনদে শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি বা পদোন্নতি বা বিএড স্কেল দেওয়া হয়না সেইসব প্রতিষ্ঠানের সনদ দেখিয়ে প্রায় শখানেক জনবল সহকারি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা হয়ে যাচ্ছেন। এটা কি করে সম্ভব?