গোপালগঞ্জে ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়ে চলছে পাঠদান

দৈনিক শিক্ষাডটকম, গোপালগঞ্জ |

দৈনিক শিক্ষাডটকম, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জ শহরের পূর্ব মিয়াপাড়া খাটরা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ভবনের কলাম ও বিমে ফাটল ধরেছে। কখনো কখনো পলেস্তারা খসে পড়েছে। কোথাও কোথাও রড বের হয়ে গেছে। বৃষ্টি হলে ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে। বিদ্যালয়টিতে নেই খেলার মাঠ। এছাড়া সেখানে পর্যাপ্ত ওয়াশরুম নেই। রয়েছে নিরাপদ পানির অভাব।

১৯৮৯ খ্রিষ্টাব্দে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে  ফ্লাড শেল্টারের আদলে বিদ্যালয়ের একটি ভবন নির্মাণ করে দেয় সরকার। ভবনের নিচতলা ফাঁকা। দ্বিতীয় তলায় চারটি রুম রয়েছে। এর মধ্যে একটি রুম অফিস কক্ষ হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে। আর তিনটি রুমে দুই শিফটে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে  বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। এ বিদ্যালয়ে বর্তমানে ছয় জন শিক্ষক।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিবীতেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, আমি বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার বর্ণনা দিয়ে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে চিঠি দিয়েছি। এই ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করে এখানে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য চিঠিতে দাবি জানিয়েছি। প্রধান শিক্ষক আরো বলেন, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে আমাদের মোট ১২৮ জন শিক্ষার্থী ছিল। ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে তা কমে দাঁড়ায় ১১৮ জনে। চলতি বছর ১১২ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে প্রতি বছর শিক্ষার্থী কমছে বলে জানান প্রধান শিক্ষক।

বিদ্যালয়ের সহাকারী শিক্ষক গুলশান আরা জেইজী বলেন, এখানে প্রতিকূলতার মধ্যেও ভালোভাবে পাঠদান করা হয়। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আন্তরিক। তাই বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষার সার্বিক ফলাফল বেশ ভালো।  বিদ্যালয়টির ক্যাচমেন্ট এরিয়াও বিশাল। কিন্ত জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে  শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা  বিদ্যালয় থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।  আমরা নতুন ভবন পেলে বিদ্যালয়টি গোপালগঞ্জের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠে পরিণত হবে । ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী জুলহাস মোল্লা , সানজিদা ইসলাম বলে, মাঝে মধ্যেই পলেস্তারা খসে পড়ে। এতে স্কুলে আসতে ভয় লাগে। ভবনের অবস্থা ভালো নয়। পর্যাপ্ত বাথরুম  নেই। নিরাপদ খাওয়ার পানির অভাব রয়েছে। স্কুলে খেলার মাঠ নেই। এ সমস্যাগুলোর সমাধান চাই।

তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মীম খানম, তাসলিম সিনহা বলে, বৃষ্টি হলে ছাদ দিয়ে পানি পড়ে। ক্লাসে বসা যায় না। অনেক বৃষ্টি হলে মেঝেতে পানি জমে যায়। ক্লাস রুমে আর ক্লাস করা যায় না। আমাদের স্কুলে নতুন ভবন করে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইউসা খানমের বাবা অহিদুল ইসলাম বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়ে মেয়েকে পাঠিয়ে সব সময় আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। কখন পলেস্তারা খসে মেয়ে আহত হয়।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পরিমল চন্দ্র বালা বলেন, বিষয়টি নিয়ে ভাবছি। এ ব্যাপারে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য পাঠিয়েছি। জরাজীর্ণ বিদ্যালয় ভবনটি ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য সুপারিশ করেছি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ - dainik shiksha সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল - dainik shiksha জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় - dainik shiksha শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024969577789307