জাতীয় প্রেস ক্লাব এলাকা ত্যাগ করবেন না আন্দোলনরত শিক্ষকরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন তারা। প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ কিংবা প্রতিনিধির মাধ্যমে হলেও তার কথা শুনতে চান তারা। তাই রোববার গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিল হলেও ক্লাসরুমে ফিরবেন না আন্দোলনরত শিক্ষকরা।
শিক্ষা জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে গত ১১ দিন যাবত প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলন করছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শিক্ষকরা। শিক্ষকদেরকে ক্লাসে ফেরাতে ইতোমধ্যে দু’দফা আলোচনা হয়েছে। প্রথমে আন্দোলনের সপ্তম দিন ১৭ জুলাই মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আলোচনা করেন।
পরে ১৯ জুলাই শিক্ষামন্ত্রী ডেকে নেন আন্দোলনকারীদের দুই প্রতিনিধিকে। কিন্তু সেখান থেকে কার্যকর কোনো আশ্বাস পাননি তারা। বরং ‘নির্বাচনের আগে জাতীয়করণ সম্ভব নয়’- শিক্ষামন্ত্রীর এমন বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হন তারা। এরপর তারা দাবি আদায়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান।
এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ)। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শেখ মো. কাওছার আহমেদ শুক্রবার বলেন, আসলে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি, বক্তব্য হয়েছে। আমরা যাওয়ার পর তিনি জানতে চান দাবি কী? দাবির কথা বলার পরই তিনি (মন্ত্রী) বক্তব্য দেন। বক্তব্যে সরকার কী কী দিয়েছে তা উল্লেখ করেন। তখন সেখানে উপস্থিত অন্যরা আরো দুটি যুক্ত করেন যা শিক্ষামন্ত্রী বলতে পারেননি। সুতরাং ওখানে কোনো আলোচনা হয়নি। এ অবস্থায় বৈঠক শেষ করে দেয়ার পর আমি অনুমতি নিয়ে দাবির ব্যাপারে কথা বলি। কিন্তু মন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, নির্বাচনের আগে সম্ভব নয়। তখন আমি এটাও বলি যে, আপনি যদি এখন শতভাগ উৎসব ভাতা দেয়ার ঘোষণা দেন- তা নির্বাচনের আগে দেয়া লাগবে না। পরবর্তী ঈদ নির্বাচনের পর। কিন্তু তিনি আমাদের কথা আমলে নেননি।
শিক্ষক সমিতির এই নেতা আরো বলেন, আসলে শিক্ষামন্ত্রী কৌশল করছেন। আমরাও আন্দোলন করছি। গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিল করে স্কুল খুলে দেয়া সেই কৌশলেরই অংশ। কিন্তু কোনো কৌশলের কাছে শিক্ষকরা নতি স্বীকার করবে না। তারা ক্লাসে ফিরে যাবেন না। আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে গত ১১ জুলাই থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। পরে গত ১৬ জুলাই থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝোলানোর কর্মসূচি পালন করছেন তারা।