গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরাম (২০২৩) ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত এবং সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারের শীর্ষস্থানীয় প্রতিনিধিদেরে এক মিলনমেলা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামের উদ্বোধনী পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে যোগ দেন এবং সেখানে তিনি বক্তৃতা করেন।
বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কমিশন আয়োজিত ২৫-২৬ অক্টোবরের গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং সারা বিশ্ব থেকে রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান এবং বেসরকারি খাত, সুশীল সমাজ, অর্থায়ন প্রতিষ্ঠান এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের প্রতিনিধি ও নেতৃস্থানীয় চিন্তাবিদরা অংশ নেন।
ইইউ টুডে এক প্রতিবেদনে জানায়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দেশের অর্জন সম্পর্কে আবেগের সাথে কথা বলেছেন। তিনি বর্তমানে দ্বিতীয় মেয়াদে সরকারপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বাংলাদেশে বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ জিডিপি বৃদ্ধির হার রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। আমাদের ৭০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি ১৫ বছরের কম সময়ে ৪৬৫ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীততে পরিণত হয়েছে। ’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের কোটি কোটি মানুষকে দারিদ্র্য থেকে মুক্ত করেছি। ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে দেশে চরম দারিদ্র্যের হার ছিল ২৫.১ শতাংশ। যা এখন ৫.৬ শতাংশে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নীত হবে।’
ইইউ টুডে তাদের প্রতিবেদনে আরও জানায়, শেখ হাসিনার পিতা এবং বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের জাতির পিতা হিসেবে সম্মানিত। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের আগস্টে বিদ্রোহী সেনা অফিসাররা পরিবারের অন্যান্য ১৮ জন সদস্যের সঙ্গে তাকেও হত্যা করেন। শুধু শেখ হাসিনা এবং তার বোন তখন ইউরোপে ছিল বলে বেঁচে যান।
জাতিসংঘের ডেপুটি সেক্রেটারি-জেনারেল আমিনা জে. মোহাম্মদের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষ হয়। জাপানের প্রধানমন্ত্রী এবং জি সেভেনের চেয়ারম্যান ফুমিও কিশিদার রেকর্ড করা বক্তব্য প্রচার করা হয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইদি রামা এবং সেনেগালের প্রেসিডেন্ট ম্যাকি সাল।
বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে স্থানীয় সময় বুধবার অপরাহ্নে গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামের সম্মেলনের বিরতির সময় সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আজকে যে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার নেতারা প্রতিটি বৈঠক ও সভায় সেটির ভূয়সী প্রশংসা করেছে। গ্লোবাল গেটওয়ে সম্মেলনের প্লেনারি সেশনের ‘ফোকাস’ বা মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন শেখ হাসিনা। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমও বারবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছেই ছুটে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামের প্লেনারি সেশনে যতগুলো বক্তৃতা হয়েছে সেখানে সবচেয়ে হৃদয়স্পর্শী এবং বিষয়ধর্মী বক্তৃতাটি ছিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে যখন মাত্র দু’মাস সময়ের ব্যবধানে বাংলাদেশে নির্বাচন হবে এই সময়ে তাকে আমন্ত্রণ জানানো অত্যন্ত গুরুত্ববহ এবং বিশ্বনেতারা যে প্রধানমন্ত্রীর সাথে আছে সেই সাক্ষ্যই বহন করে।’
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরাম চালু করেন। তিনি ’গ্লোবাল গেটওয়ে ইনিশিয়েটিভের’ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যবিষয়ক রূপরেখা নির্ধারণ করেন এবং তা অর্জন করেন।