ঘণ্টায় ২০০ ফোন বনবিভাগে, চন্দ্রবোড়া ভেবে ঢোড়া সাপও মারছে মানুষ

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া সাপ নিয়ে দেশজুড়ে আতঙ্ক আর গুজবের মধ্যে বন অধিদপ্তরের পাঁচটি হটলাইন নম্বরে ঘণ্টায় গড়ে ২০০ ফোন আসছে দেশ-বিদেশ থেকে।প্রত্যন্ত গ্রামের কেউ সাপ দেখে ফোন করে সহায়তা চাইছেন। কেউ কেউ বন কর্মকর্তাদের ভাবছেন সাপুড়ে। আবার বিদেশ থেকে প্রবাসীদের কেউ কেউ পরিবারের সদস্যদের জন্য পরামর্শ চাইছেন।

বন অধিদপ্তরের বন্যপপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের কর্মীদের এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে গত বৃহস্পতিবার থেকে। এ ইউনিটের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক অসীম মল্লিক বলেন, বৃহস্পতিবার রাত থেকে ফোন আসার চাপ শুরু হয়। প্রতিটা নম্বরে ঘণ্টায় গড়ে প্রায় ৪০টা কল এসেছে। অনেকগুলো নম্বর ওয়েটিংয়ে ছিল।

তিনি জানান, আগে তারা সাপের বিষয়ে সপ্তাহে বড়জোর দুয়েকটা ফোন পেতেন। সব মিলিয়ে দিনে ফোন আসত পাঁচ থেকে সাতটি। এখন হটলাইনের সবগুলো নম্বর সামাল দিতে হিমশি খেতে হচ্ছে।

অসীম মল্লিকের ধারণা, কোনোভাবে তাদের নম্বরগুলো ফেসবুকের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ হয়ত লিখছে, যেখানেই সাপ দেখবেন, এই নম্বরে ফোন দেবেন। এভাবেই নম্বরগুলো ছড়িয়ে পড়ছে। 

তিনি বলেন, হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে কথা হয়েছে আমাদের। সাপ মারার ছবি পাঠিয়েছে অনেকে, জীবিত সাপের ছবিও পাঠিয়েছে। এর মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটা শুধু রাসেলস ভাইপার। যত সাপ দেশে আছে, তার ৮০ থেকে ৯০ শতাংশই নির্বিষ। গত কয়েকদিনে প্রচুর ‘দাগি ঘরগিন্নি’ সাপ মারা পড়ছে। হলুদ-কালো ছোপের কারণে অনেকে এটাকে রাসেলস ভাইপারের বাচ্চা মনে করছেন। ঢোরা সাপের বাচ্চাগুলাকেও অনেকে রাসেলস ভাইপার মনে করছেন। এই সাপগুলো সচরাচর মানুষের কাছাকাছি থাকে।

তিনি বলেন, আমরা শুধু ফরিদপুরে রাসেলস ভাইপার পেয়েছি, পদ্মার চরে এটাতো স্বাভাবিক। কুমিল্লা থেকে অনেকে অভিযোগ পাঠিয়েছিল, পরে দেখলাম এটা ঘরগিন্নি সাপ। জামালপুর থেকে পাঠিয়েছে, সেটা দেখলাম চেলা সাপ।

অসীম মল্লিক বলেন, সোশাল মিডিয়ায় এ সাপ নিয়ে যেসব ভিডিও ঘুরপাক খাচ্ছে, তার বেশিরভাগই ভারতের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানাভাবে ছড়িয়ে সেগুলো আতঙ্ক বাড়াচ্ছে। আমরা মানুষকে বোঝাচ্ছি, বেশিরভাগই নির্বিষ সাপ। ছবি পাঠিয়ে দেখিয়েছি কোনটা রাসেলস ভাইপার। অনেকে আগে অনেক সাপ দেখছেন, কিন্তু তা নিয়ে ভয় ছিলো না। রাসেলস ভাইপার নিয়ে আতঙ্ক শুরুর পর তারাও সব সাপকে রাসেলস ভাইপার ভাবছেন।

বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক আমির হোসাইন চোধুরী বলেন, বছরে প্রায় ৪ লাখ মানুষকে সাপে কাটে। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার মানুষ মারা যায়। রাসেলস ভাইপারের দংশনে মারা যায় ১০০ জনের মত। সুতরাং অন্যান্য সাপের তুলনায় রাসেলস ভাইপার কম বিষাক্ত, আগ্রাসীও কম। কিছু কিছু জায়গায় আক্রান্ত হয়েছে মানুষ, কিন্তু গুজব বেশি উঠে গেছে। এলাকার মানুষ রাসেলস ভাইপার সাপ চিনতে পারছে না। যে কোনো সাপ দেখেই বলছে রাসেলস ভাইপার। কিন্তু এর বিস্তৃতিটা পদ্মা নদী সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে। সাপটা পাশের দেশেও আছে, অনেক দেশেই আছে; আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ - dainik shiksha ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! - dainik shiksha সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! - dainik shiksha নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস - dainik shiksha এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032980442047119