ঘুষ দিলেই ছুটি দেন শিক্ষা কর্মকর্তা

দৈনিক শিক্ষাডটকম,পটুয়াখালী |

দৈনিক শিক্ষাডটকম,পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হিটলারুজ্জামান। তাকে ঘুষ দিলে যত দিন ইচ্ছা ছুটি পাওয়া যায়। দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকলেও কোনো শাস্তি হয় না, উল্টো হাজিরা খাতায় ঠিকই সই পড়ে। সম্প্রতি তার ঘুষ নেওয়ার একটি ভিডিও প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। এতে দেখা যায়, তিনি দুবারে ১৭ হাজার টাকা নিয়ে এক নারীর একটি দরখাস্ত অনুমোদন করে দেন। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই নারীর নাম মোসা. সাবেকুন্নাহার। তিনি দশমিনার আলীপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। ২৫ জানুয়ারি হিটলারুজ্জামানের কার্যালয়ে দুই মাসের স্বাস্থ্যছুটি আনতে গেলে তাঁকে ছুটি দেওয়ার বিনিময়ে টাকা নেন শিক্ষা কর্মকর্তা।

শুধু সাবেকুন্নাহার নন, হিটলারুজ্জামানকে ঘুষ দিয়ে আরও অনেকেই ছুটি নিয়েছেন বলে অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। গত বৃহস্পতিবার দশমিনা উপজেলা ৮৬ নম্বর বজলুর রহমান ফাউন্ডেশন স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, এই স্কুলে ৬ জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। তবে উপস্থিত আছেন ৫ জন। স্কুলটির সহকারী শিক্ষক তামান্না জাহান ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখ থেকে মার্চের ১৮ তারিখ পর্যন্ত অনুপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে ১৫ দিনের ছুটি চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক ছুটি না দেওয়ায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হিটলারুজ্জামান তাঁকে অসুস্থ দেখিয়ে পুরো এক মাস ছুটি দিয়ে দেন। অথচ ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চের ১৮ তারিখ পর্যন্ত তাঁর উপস্থিতির স্বাক্ষর রয়েছে স্কুলের হাজিরা খাতায়।

বজলুর রহমান ফাউন্ডেশন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবুল চন্দ্র শীল বলেন, ‘আমার কাছে ছুটি চেয়েছিল, আমি দেইনি। পরে টিও স্যারের (হিটলারুজ্জামান) কাছ থেকে অসুস্থতাজনিত ছুটি অনুমোদন করিয়ে এনে আমাকে দিয়েছে। কিন্তু এই ছুটির দরখাস্তের সঙ্গে মেডিকেলের কোনো কাগজপত্র নেই।’

ছুটি নিয়েছেন এক মাস কিন্তু এলেন ১৮ মার্চ, এ ছাড়া হাজিরা খাতায় উপস্থিতির স্বাক্ষরও আছে—এটা কীভাবে সম্ভব? এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘সে ১৮ তারিখ এবং মাঝে মাঝে এসে সব স্বাক্ষর করে দেয়। টিও স্যার তাকে উপস্থিতি সব দিয়ে দিতে বলেছেন।’

সহকারী শিক্ষক তামান্না জাহানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্কুলে গিয়ে তো দেখেছেনই।’ এই বলে তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

দশমিনা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হিটলারুজ্জামানকে দফায় দফায় ফোন ও খুদে বার্তা দিলেও তিনি সাড়া দেননি।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোল্লা বখতিয়ার রহমান বলেন, ‘যদি এ রকম হয়ে থাকে, তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে এবং তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
৭ কলেজ নিয়ে পরিকল্পনা জানালেন শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha ৭ কলেজ নিয়ে পরিকল্পনা জানালেন শিক্ষা উপদেষ্টা অটোরিকশার ধাক্কায় ছাত্রীর মৃত্যু, ৮ দাবিতে জাবিতে ব্লকেড - dainik shiksha অটোরিকশার ধাক্কায় ছাত্রীর মৃত্যু, ৮ দাবিতে জাবিতে ব্লকেড শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা ছাত্রাবাস খোলার দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ - dainik shiksha ছাত্রাবাস খোলার দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ট্রাম্প প্রশাসনে শিক্ষামন্ত্রী হচ্ছেন লিন্ডা ম্যাকমোহন - dainik shiksha ট্রাম্প প্রশাসনে শিক্ষামন্ত্রী হচ্ছেন লিন্ডা ম্যাকমোহন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে চবিতে এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রামে আবেদন করুন, ফি ১০০০ - dainik shiksha চবিতে এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রামে আবেদন করুন, ফি ১০০০ কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বাউবিতে বিএড প্রোগ্রামে ভর্তি, আবেদন ফি ৭০০ - dainik shiksha বাউবিতে বিএড প্রোগ্রামে ভর্তি, আবেদন ফি ৭০০ চবিতে এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রামে আবেদন করুন, ফি ১০০০ - dainik shiksha চবিতে এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রামে আবেদন করুন, ফি ১০০০ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026719570159912