পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার জোলাগাতী মুসলিম আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চার পদে কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষার আগেই ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়োগে লাখ লাখ টাকার ঘুষ লেনেদেনের বিষয়ে একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পরে এলাকার লোকজন সমালোচনার মুখে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার স্কুলে চারটি নবসৃষ্ট শূন্যপদ কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও অনিবার্য কারণে তা স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে এই চারটি পদে নিয়োগে ঘুষ লেনদেনের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর, নৈশপ্রহরী, আয়া ও অফিস সহায়কের চারটি পদে নিয়োগের জন্য গত ১০ আগস্ট পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিলো স্কুল কর্তৃপক্ষ।
ছড়িয়ে পড়া ওই অডিও ক্লিপে, আয়া পদের প্রার্থী ডলির বাবা হারুন খান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হেমায়েত তালুকদারের সঙ্গে নিয়োগ পরিক্ষার আগে দুই লাখ টাকা ঘুষ লেনদেনের কথপোকথন শোনা যায়। আর এই পদে নিয়োগের জন্য তিনি ৬ লাখ টাকায় চুক্তি করেছেন বলে জানা যায়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুষ লেনদেন অডিও ক্লিপ প্রকাশ হওয়ায় এ নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. সাব্বির। তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাছে এ দাবি জানিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিতের কারণ জানতে চাইলে জোলাগাতী মুসলিম আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রুস্তম আলী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের নিদের্শনায় শনিবারের নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হয়নি। তবে ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. হান্নান মিয়া দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, জোলাগাতী মুসলিম আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শনিবারের চারটি পদের নিয়োগ পরীক্ষা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিদের্শনায় ও নিয়োগের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুষ লেনদেনের খবর ছড়িয়ে পড়ায় স্থগিত করা হয়েছে।
জানতে চাইলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি হেমায়েত তালুকদার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন,আমার বিরুদ্ধে ঘুষ লেনদেনের অডিওটি এডিট করে প্রতিপক্ষরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে। আর নিয়োগের জন্য টাকা নেয়ার বিষয়ে অভিযোগকারী ম্যানেজিং কমিটির সদস্য পর পর তিনটি সভায় উপস্থিত ছিলেন না। তাই তার সদস্য পদ বাতিল করা হয়েছে। সাব্বির তার পছন্দের এক প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়ার জন্য আমাকে বলছিলো। তবে আমি তাকে বলেছি যারা পাস করবেন তারাই নিয়োগ পাবেন। এখানে অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই বলে আমি তাকে জানিয়ে দেই। এর জন্যই সাব্বির আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। নিয়োগের জন্য কোনো টাকা লেনদেনের ঘটনা ঘটেনি।
জানতে চাইলে কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বজল মোল্লা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, নিয়োগ কমিটি বা প্রক্রিয়ার সঙ্গে আমি জড়িত না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগে অনিয়মের বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে বলা হয়েছে। নিয়োগে টাকা লেনদেনের অভিযোগ ওঠায় পরীক্ষা স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে।