বিভিন্ন আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ নিয়ে কৌতূহল থাকে পাঠকদের কাছে। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা'র আঞ্চলিক কমিটি ঘূর্ণিঝড়গুলোর নামকরণ করে থাকে। উত্তর ভারত মহাসাগরের উপর সৃষ্টি হওয়া ঝড়ের নাম দিতে পারবে সংস্থার অন্তর্গত মোট আটটি এশীয় দেশ।
এশীয় দেশগুলো হল- বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, ইরান, থাইল্যান্ড, ওমান এবং মালদ্বীপ। সামুদ্রিক ঝড়ের নামকরণের এই রীতি কিন্তু খুব একটা পুরানো নয়। ২০০০ সাল থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু হয়।
এর আগে মার্কিন আবহাওয়াবিদ ভার্নন ভোরাকের দেখানো পথে ঘূর্ণিঝড়দের নির্দিষ্ট করা হতো। জলীয় বাষ্পের ঘনত্ব, সম্ভাব্য তীব্রতার তারতম্য অনুযায়ী নির্দিষ্ট রং দিয়ে চিহ্নিত করা হত উপগ্রহের পাঠানো ছবিতে ঘূর্ণিঝড়কে।
ঘূর্ণিঝড়ের নামে থাকত নির্দিষ্ট নম্বর এবং যে সাগরের জলভাগে এর জন্ম হচ্ছে, তার নামের অংশ। কিন্তু সে সব নামকরণ সাধারণ মানুষের কাছে দুর্বোধ্য ছিল। ফলে তাণ্ডবলীলার পূর্বাভাস দেওয়া, মানুষ বা জাহাজ বা জলযানগুলোকে সতর্ক করা কঠিন হয়ে পড়তো।
আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’
২০০৪ সাল থেকে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরের উপকূলবর্তী দেশগুলোতে ঝড়ের নামকরণ শুরু হয়। এর আগে থেকেই ব্রিটেন বা অস্ট্রেলিয়া এলাকায় ঝড়ের নামকরণ করা হতো। ভারত মহাসাগরে ঘূর্ণিঝড়কে সাইক্লোন বলা হলেও আটলান্টিক মহাসাগরীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়কে বলা হয় হারিকেন, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বলা হয় টাইফুন।
সাম্প্রতিক অতীতে ‘ফণী’-র নাম দিয়েছিল বাংলাদেশ। তারও আগে ২০০৯ সালে বিধ্বংসী আয়লার নামকরণ করেছিল মিয়ানমার। ২০১৯-এ ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর নাম দিয়েছিল ভারত। এর পাঁচ বছর আগে ঘূর্ণিঝড় ‘হুদহুদ’-এর নাম দিয়েছিল ওমান।
ইজরাইলের জাতীয় পাখির নামে এই নামকরণ করা হয়েছিল। শুধু ‘হুদহুদ’-ই নয়। প্রতি ঘূর্ণিঝড়ের নামের সঙ্গেই জড়িয়ে থাকে কোনো দেশের ঐতিহ্য।
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন
হুদহুদের মতো বুলবুল-ও পাখি। ‘ফণী’র অর্থ সাপ। ঘূ্র্ণিঝড় তিতলি-র নাম দিয়েছিল পাকিস্তান। তিতলি মানে, প্রজাপতি। আর থাইল্যান্ডের দেওয়া নাম আমপান বা উম পুনের অর্থ, আকাশ। অর্থাৎ প্রকৃতির রুদ্ররূপের নামকরণ হয় প্রকৃতির বিভিন্ন অংশের নামেই।
আগামী কয়েক বছরের ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ এরইমধ্যে হয়ে গেছে। এরমধ্যে ‘নিসর্গ’ নামটি দিয়েছে বাংলাদেশ। ভারতের দেওয়া ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘গতি’। ‘নিভার’ নামের প্রস্তাব দিয়েছে ইরান। মালদ্বীপের দেওয়া নাম ‘বরেভি’, ‘টাউটি' ওমান নাম দিয়েছে ‘ইয়াস’। নামগুলো ভবিষ্যতে যে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হবে, তাদের জন্য রাখা হয়েছে।