গ্রামাঞ্চলে গরু দিয়ে জমি চাষের দৃশ্য খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু গরুর স্থলে যদি জুড়ে দেওয়া হয় ঘোড়া, তবে তা ব্যতিক্রমী দৃশ্যেরই জন্ম দেয়। এবার এমন চিত্রই দখা গেল শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায়।
গত সোমবার সকালে উপজেলার কলসপাড় ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া, গোল্লারপাড় ও বালুঘাটা গ্রামে ঘোড়া দিয়ে কৃষিজমি চাষ করতে দেখা গেছে। ওই ইউনিয়নে অন্তত ২০ জন আছেন, যারা ঘোড়া লালন পালন করেন ও ঘোড়াকেই তাদের আয়ের উৎস হিসেবে ব্যবহার করেন। তারা বছরের কিছু সময় ঘোড়ার গাড়ি দিয়ে মালপত্র আনা-নেওয়ার কাজ করেন। আবার বোরো ও আমন মৌসুমে চারা রোপণ করার জন্য জমি সমান করতে ঘোড়া দিয়ে মই দেওয়া হয়। ঘোড়া দিয়ে মই দিলে কাঠাপ্রতি ৪০-৫০ টাকা ও একরপ্রতি ৭০০-৮০০ টাকা পান মালিকরা। জমি চাষ দিলে প্রতি কাঠার (৫ শতাংশ) জন্য ২০০ টাকা পান তারা। এতে তাদের বাড়তি আয় হয়।
ঘোড়া দিয়ে জমি চাষ করে জীবিকা নির্বাহকারী আশরাফ আলী, হযরত আলী ও জয়নাল আবেদীন জানান, ঘোড়ার দাম কম হওয়ায় ঘোড়া দিয়ে জমি চাষাবাদ করছেন অনেকে। তবে শুধু চাষাবাদ নয়, মালপত্র আনা-নেয়ার কাজেও ঘোড়া ব্যবহার করা হয়।
ঘোড়ার মালিক দুদু মিয়া বলেন, 'যখন বোরো ও আমন মৌসুম শুরু হয়, তখন একটু রোজগারের জন্য চাষাবাদের কামও করি। দিনে ঘোড়া দিয়া ২-৩ একর জমি মই দেওন যায়। আমরা প্রতি কাঠা ৪০-৫০ টাহা নেই। প্রতি কোর বা একরপ্রতি ৭০০-৮০০ টাহা নেই। জমিতে হাল দিয়ে দিলে নেই প্রতি কাঠা ২০০ টাহা করে। এতে দিনে ১২শ থেকে ১৫শ টাহা পাই। হাল চাষ করে আমাদের দিনে ভালাই কামাই অয়।'
কৃষক সামছুদ্দিন, পবন আলী ও মারুফ বলেন, তাদের এলাকায় বড় কোনো গরু বা মহিষ নেই। তার জন্য ঘোড়া দিয়ে তাদের জমিগুলোতে মই দিতে হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর কবির বলেন, এখন যান্ত্রিক উপায়েই জমি চাষ করে কৃষকরা। তবে উপজেলার অনেকেই তাদের বাড়তি আয়ের জন্য ঘোড়া দিয়ে মই দেয় বা হাল চাষ করে। কৃষি বিভাগ সবসময় আধুনিক মানের যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে চাষাবাদ করার জন্য উৎসাহ দিচ্ছে।