চট্টগ্রাম মেডিকেল অধ্যক্ষের পদত্যাগ চায় ছাত্রলীগের একাংশ

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি |

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তারের পদত্যাগ দাবি করেছে ছাত্রলীগের একাংশ। ছাত্রলীগের দু'পক্ষে সংঘর্ষের ঘটনায় ৩১ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করায় এ দাবি জানানো হয়েছে। 

তাদের দাবি, বহিষ্কৃতদের অধিকাংশ নির্দোষ। বিএমএ চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরীর পরামর্শ অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চমেকের অধ্যক্ষকে ছাত্রলীগবিদ্বেষী ও জামায়াতের মদদপুষ্ট হিসেবেও উল্লেখ করা হয়েছে। 

ছবি : সংগৃহীত

বুধবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানায় চমেক ছাত্রলীগের একাংশ। তারা কলেজ ক্যাম্পাসে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ চমেক শাখার সভাপতি ডা. কে এম তানভীর।

এতে বলা হয়, চমেকের একাডেমিক কাউন্সিল বৈধ নয়। তারা ছাত্র বহিস্কারের নামে ভণ্ডামি করেছে। অধ্যক্ষ দুরভিসন্ধিমূলকভাবে চমেক হাসপাতালের পরিচালককে একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় আমন্ত্রণই জানাননি।

চমেকের ছাত্র মাহাদি জে আকিবের ওপর হামলাকারীরা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে চিহ্নিত হলেও অধ্যক্ষ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি। অধ্যক্ষের সঙ্গে আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসে গিয়ে মাহাদি হামলার শিকার হয়েছেন। হামলাকারী ছিল ১৬ জন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে নির্দোষ ছাত্রদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে। বহিস্কৃত ৩১ জনের মধ্যে ২৩ জনকে কোনো ধরনের সাক্ষ্য-প্রমাণ ছাড়াই মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে বহিষ্কার করা হয়েছে।

অধ্যক্ষের সঙ্গে বসে একজন ঠিকাদার নেতা ও তার দুই সঙ্গী বহিস্কারের তালিকা করেছেন অভিযোগ করে বলা হয়, ১৯৯৩ সালে ক্যাম্পাসে ট্রিপল মার্ডারের মূল হোতা নিজের ঠিকাদারি ও সরবরাহ ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করতে চাইছেন। দুদকের তদন্তে কোণঠাসা হয়ে পড়া এই ঠিকাদার চিকিৎসকই ক্যাম্পাসে কিছু ছাত্রকে বিভ্রান্ত করছেন। 

ঠিকাদার নেতার পরিচয় জানতে চাইলে ডা. তানভীর বলেন, 'বিএমএ নেতা ফয়সল ইকবাল চৌধুরীর প্রেসক্রিপশনে বহিস্কারাদেশের তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। এ ছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ ছাত্র সংসদের দুই জন প্রতিনিধি একাডেমিক কাউন্সিলে আছেন। আমরা বারবার অধ্যক্ষকে ছাত্র সংসদ বিলুপ্ত করার কথা বললেও তিনি এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেননি।'

অধ্যক্ষ জামায়াতের মদদপুষ্ট দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, অধ্যক্ষের স্বামী জামায়াতের অর্থায়নে পরিচালিত আইআইএমসির অধ্যক্ষ। তিনিই মূলত চমেক পরিচালনা করছেন। জামায়াতপন্থি কয়েকজন শিক্ষককে চমেকের বিভিন্ন বিভাগের প্রধান করা হয়েছে। জামায়াতপন্থি অনেককে বিভিন্ন পরীক্ষায় পরীক্ষক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে। একাডেমিক কাউন্সিলের জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের অবৈধভাবে উপস্থিত রেখে অধ্যক্ষ সাহেনা আক্তার ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বহিষ্কার করেছেন এবং শিবির নেতাকর্মীদের ক্যাম্পাসে অবস্থান সহজ করে দেওয়ার অপচেষ্টা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে অধ্যক্ষ ছাড়াও ডা. মিজান ইন্টার্ন হোস্টেলের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মিজানুর রহমানেরও পদত্যাগ দাবি করা হয়।

অভিযোগ প্রসঙ্গে ডা. সাহেনা আক্তার বলেন, 'কোনো শিক্ষকই চান না শিক্ষার্থীর জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হোক। কিন্তু উপর্যুপরি সংঘাতও চায় না একাডেমিক কাউন্সিল। যাদের বিষয়ে সংঘাতে জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।'

সংবাদ সম্মেলনে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. খোরশেদুল ইসলাম, ডা. শাশ্বত মজুমদার আকাশ, ডা. মো. সাকি, মো. ফয়েজ, কনক দেবনাথ, শাওন দত্ত, মো. সাইফুল্লাহ, ইফতেখারুল ইসলাম ও মাসফি জুনায়েদ উপস্থিত ছিলেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও - dainik shiksha স্কুল-কলেজ খুলছে রোববার, ক্লাস চলবে শনিবারও নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0037870407104492