সরকারি চাকরির ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল ও ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনকারী এক ছাত্রকে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) নাট্যকলা বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফির বাবার নম্বরে ফোন দিয়ে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
রোববার (৭ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে হত্যার হু*মকি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাফি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত হৃদয় আহমেদ রিজভী নাট্যকলা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, রোববার রাতে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়। একটি নম্বর থেকে ফোন করে আমার বাবাকে বলা হয় আপনার ছেলে যদি কোটা আন্দোলন থেকে সরে না আসে তাহলে আপনার ছেলের লাশ পাবেন। পরে তার পরিচয় জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বলে জানিয়ে কল কেটে দেন।
অভিযোগকারী রাফি বলেন, শুরু থেকেই আমি কোটাবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। আমার বাবাকে ফোন দিয়ে এরকম প্রাণনাশের হুমকি দেয়া কতটা সমীচীন আমার জানা নেই। যে নম্বর থেকে কল করা হয়েছিল সেটি নিয়ে আমি আমার সাধ্যমতো খবর নিয়েছি। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, ওইটা আমার ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র রিজভীর নম্বর। তার বাড়ি নরসিংদী জেলায়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলে থাকেন। আমি যত জায়গাতেই খোঁজ নিয়েছি প্রত্যেক জায়গা থেকেই একই তথ্য এসেছে।
এই তথ্যগুলো যাচাইবাছাই করে সত্যতা খুঁজে পেয়েছে গণমাধ্যম। এ ছাড়াও হুমকিদাতা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ চুজ ফ্রেন্ড উইথ কেয়ার (সিএফসির) অনুসারী বলে জানা গেছে।
অভিযোগকারী রাফি আরো বলেন, আমি এখন ক্যাম্পাসে ও ক্যাম্পাসের বাইরে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি। আমি আব্বাকে স্থানীয় থানায় জিডি করতে বলেছি। আমিও নিরাপত্তা চেয়ে হাটহাজারী থানায় জিডি করব। এরইমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
এদিকে হুমকি প্রদান করা সেই নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। এ ছাড়া অভিযুক্ত হৃদয় আহমেদ রিজভীর অন্য নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাতে সংযোগ পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি ও উপগ্রুপ সিএফসির নেতা সাদাফ খানের কাছে জানতে চাইলে তিনি কালবেলাকে বলেন, হৃদয় আহমেদ রিজভী নামে যার কথা বলা হচ্ছে তাকে আমি চিনি না। তবে ছাত্রলীগ থেকে এ ধরণের কোনো নির্দেশনা নেই। গণতান্ত্রিক দেশে আন্দোলন যে কেউ করতে পারে। আমাদের ছাত্রলীগের অনেকই আন্দোলনে যোগ দিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক ড. অহিদুল আলম বলেন, এরকম একটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি। প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়েছে বিধায় অভিযোগকারী রাফিকে থানায় জিডি করতে বলেছি। এ বিষয়ে জিডি সাপেক্ষে তদন্ত করা হবে। এ ছাড়াও আমরা বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখব।