চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সাংবাদিক মারধরের ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের দুজনকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃতরা হলেন- চবি ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী খালেদ মাসুদ, শাখা ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ও সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী আরাফাত রায়হান। তবে চবি প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে চরম অসন্তোষ জানিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (চবিসাস) নেতৃবৃন্দ।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২২ জুন) অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অফ রেসিডেন্স হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির এক ভার্চুয়াল সভায় বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে চবি প্রক্টর ড. মোহাম্মদ নূরুল আজিম সিকদার বলেন, ‘সাংবাদিক মারধরের ঘটনায় বুধবার তদন্ত কমিটি রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বোর্ড অফ রেসিডেন্স হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির সভায় দোষীদের ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কারাদেশ বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর হবে।’
এদিকে ছাত্রলীগ নেতাদের বহিষ্কারকে ‘আই ওয়াশ’ বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (চবিসাস) নেতৃবৃন্দ। এই সিদ্ধান্তে অসন্তোষ জানিয়ে চবিসাস সভাপতি মাহবুব এ রহমান বলেন, ‘৬ মাসের বহিস্কারের এ সিদ্ধান্ত আমাদের আশাহত করেছে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে এমন বিচার কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য না। ভুক্তভোগী সাংবাদিক এখনও হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছেন। এই শাস্তির নামে মূলত অপরাধীদের সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে।’
চবি প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে চরম হতাশা ব্যক্ত করে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ইমাম ইমু বলেন, ‘বিচারের নামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের সঙ্গে প্রহসন করছে। আমরা এ রকম বিচার চাইনি। এটা শুধুই লোক দেখানো। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অপরাধীদের কাছে জিম্মি মনে হচ্ছে। অপরাধীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের চেয়ে ক্ষমতাশালী প্রমাণ করলো তদন্ত কমিটি। আমরা এ রায়ে কোনোভাবেই সন্তুষ্ট না। আমরা আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।’
এর আগে, গত ১৯ জুন রাতে চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্য ও একটি অনলাইন পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি দোস্ত মোহাম্মদকে মারধর করে ছাত্রলীগের ১০-১২ জন নেতাকর্মী। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনা তদন্তে ২০ জুন তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।