আবাসিক হলের সংস্কার কাজের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের আগামী তিন দিনের মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। আইনবিরোধী এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা।
১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী, কোনো উপলক্ষকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের জন্য সাত কর্মদিবস আগে প্রত্যেক হলে নোটিশ পাঠাতে হবে। শুধু বিশেষ পরিস্থিতিতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হল ত্যাগের নোটিশ দেওয়া যায়। কিন্তু চবিতে এই নিয়মের হেরফের করেছে প্রশাসন। গতকাল সোমবার বিকালে প্রক্টর নুরুল আজিম সিকদার স্বাক্ষরিত এক নোটিশে আগামী ২৩ জুনের মধ্যে হল ত্যাগের অনুরোধ করা হয়। হল খোলা হবে ১৫ জুলাই। তবে ১২ জুলাই অনেক বিভাগের পরীক্ষা রয়েছে। এ ছাড়া পরীক্ষা রয়েছে চলতি মাসের ২২ জুন ও ২৩ জুন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, রুমের সংস্কার কাজ আমাদের অবর্তমানে হবে কেন? রুম থেকে কিছু হারিয়ে গেলে দায় কি প্রশাসন নেবে? হল সংস্কারের নামে দেয়ালে চুনকাম ছাড়া আর কিছুই হয় না। পুরনো হলগুলোর বেশির ভাগ ভাঙা। দেয়াল বেয়ে পানি পড়ে, বৈদ্যুতিক তারে শর্টসার্কিট হয়, পানির পাম্প নষ্ট। এসবের কোনো উন্নয়ন নেই। অনেক বিভাগে পরীক্ষা চলছে। শিক্ষার্থীরা কোথায় থেকে পরীক্ষা দেবে? প্রশাসন স্বেচ্ছাচারিতা চালাচ্ছে। এখন শিক্ষার্থীরা কি উপাচার্যের বাসভবন থেকে পরীক্ষা দেবে?
আলাওল হলের সাাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ওয়াল উল হক বলেন, এবার কোরবানি ক্যাম্পাসে করার ইচ্ছা ছিল। তাই বাড়ি যাওয়ার টিকিট কাটিনি। কোরবানির ছুটিকে কেন্দ্র করে ট্রেনের সকল সিট বুকড। আগামী ৭ দিনের কোনো সিট পাচ্ছি না। আমাদের হল ছাড়ার অনুরোধের দরকার নেই। আমি চবি প্রশাসন থেকে আমাদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
প্রীতিলতা হলের শিক্ষা ও গবেষণা অনুষদের শিক্ষার্থী আদৃতা হোসেন জানান, আমাদের বর্ষ সমাপনী চলছে। ২৫ তারিখ পরীক্ষা রয়েছে। সেই পরীক্ষা বন্ধ হওয়ার কোনো নোটিশ এখনো পাইনি। এ ছাড়া আরও অনেক অনুষদে ২২ জুন ও ২৪ জুন পরীক্ষা রয়েছে। এই সময় পরীক্ষার প্রস্তুতি নেব নাকি জিনিসপত্র গোছাব।
শেখ হাসিনা হলের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী তন্বী নাথ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা ছুটিতে হলে অনেক শিক্ষার্থী থেকে যায়। সব না ভেবে এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত ঘোষণা অনুচিত।
চবির প্রক্টর নুরুল আজিম সিকদার বলেন, এই সিদ্ধান্ত নিয়ম মেনেই নেওয়া হয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের উন্নয়নের জন্য কাজ করছি।