চলে গেলেন বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের পালিত কন্যা নিহার বালা আর নেই। বুধবার নড়াইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। দীর্ঘ ৯ বছর দৃষ্টিহানী, শ্বাসকষ্টসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। অসুস্থ অবস্থায় বুধবার দুপুরে তাকে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কিছুক্ষণ পরই তিনি মারা যান। মৃত্যকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। তিনি এক নাতিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
বরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানকে দীর্ঘ দুই দশক সেবাযত্ন ও ভালোবাসায় আগলে রেখেছিলেন তার পালিত কন্যা নীহার বালা সাহা। তিনি সুলতানকে ছবি আঁকার উৎসাহ যুগিয়েছেন। পারিবারিক সমস্ত কাজ, শিল্পীর চিড়িয়াখানার পশু পাখিদের সেবাযত্ন, শিল্পীর অসুস্থতা এবং দৈনন্দিন জীবন-যাপনে একমাত্র সেবিকা হয়ে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। শিল্পীর মৃত্যুর পর নিহার বালার আর্থিক সংকট শুরু হয়। অর্থাভাবে ছানি অপারেশন করতে না পারায় ৯ বছর দৃষ্টিহীন ছিলেন।
জানা যায়, নিহার বালার স্বামী হরিপদ সাহা ও দুই কন্যাসহ সুলতানের বাড়ির পাশে বসবাস করতেন। শিল্পীর সঙ্গে হরিপদ সাহার ঘনিষ্ট সম্পর্কের সুবাদে নীহার শিল্পী সুলতানকে কাকু বলে ডাকতেন। সুলতানও তাকে মেয়ের মত স্নেহ করতেন। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের দিকে স্বামীর মৃত্যুর পর দুই মেয়ে নিয়ে আর্থিক অনিশ্চতার জীবন-যাপন করছেন নীহার বালা। এ সময় আমশয়সহ নানা মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হয়ে ভূগতে শুরু করেন শিল্পী সুলতান। তখন অসহায় শিল্পীর সেবায় এগিয়ে আসেন নীহার বালা। সেই থেকে নিহার বালা ছোট ভাই দুলাল সাহা এবং দুই কন্যা বাসনা ও পদ্মকে নিয়ে শিল্পীর বাড়িতে তার বসবাস শুরু করেন।
তিনি সুলতান কমপ্লেক্সের জায়গায় সরকার থেকে দেয়া একটি টিনসেড ঘরে নাতি ছেলেসহ পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। অসুস্থ্য নীহার বালার শেষ ইচ্ছা ছিল, তিনি যে বাড়িতে বসবাস করেছেন সেটি যেন তাকে লিখে দেয়া হয়।