ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় এক ঠিকাদারের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগে দুই ছাত্রলীগ নেতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁদের আটক করা হয়। এ ঘটনায় মামলার পর তাঁদের গ্রেফতার দেখিয়ে আজ শুক্রবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ইমামুল খান (২৫), সহসভাপতি আবু মুসা (২২) ও কর্মী জসীম মোল্লা (২০)। তাঁদের সবার বাড়ি উপজেলা সদরের রামকান্তপুর ইউনিয়নের মাঠ সালথা এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা সদরের মাঠ সালথা কলেজ রোড এলাকায় দুই কিলোমিটার রাস্তার কার্পেটিং কাজ করছে ‘তাসা কনস্ট্রাকশন’ নামের ফরিদপুরের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গতকাল বেলা ১১টার দিকে ওই কাজের মালামালের ট্রলি ঠেকিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন ৯ তরুণ। চাঁদা না দেওয়ায় তাঁরা ট্রলির চালককে লাঠি ও রড দিয়ে মারধর করে রাস্তার কাজ বন্ধ করে দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ছাত্রলীগের তিন নেতা-কর্মীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। অন্য ব্যক্তিরা পালিয়ে যাওয়ায় তাঁদের আটক করা সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চঞ্চল গাইন নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে ছাত্রলীগের ওই দুই নেতাসহ নয়জনকে আসামি করে গতকাল রাতে সালথা থানায় চাঁদাবাজির অভিযোগে একটি মামলা করেন। আজ দুপুরে তাঁদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তাসা কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী শহিদুল ইসলাম বলেন, ওই এলাকার কয়েক যুবক কক্সবাজারে যাওয়ার খরচ চেয়ে রাস্তার মালামালের ট্রলি আটকে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দাবির বিষয়টি থানা-পুলিশকে জানালে তাঁদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে থানায় একটি মামলা হয়েছে। এর আগে তাঁদের পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছেন বলে দাবি করেন ওই ঠিকাদার।
অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে গ্রেফতার আবু মুসার ভাই ইলিয়াস মোল্লা বলেন, ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাস্তায় নিম্নমানের কাজ করছে—এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর ভাইসহ স্থানীয় কয়েক তরুণ প্রতিবাদ করেন। তাঁদের কাছে চাঁদা দাবির বিষয়টি ভিত্তিহীন।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রায়মোহন রায় বলেন, ছাত্রলীগ ভালো কাজ করলে সুনাম হয়। আর খারাপ কাজ করলে পুরো সংগঠনের দুর্নাম হয়। তিনি বিষয়টি শুনেছেন। সেখানকার একটি পক্ষ বলছে, রাস্তায় নিম্নমানের কাজ হচ্ছে বলে তাঁরা বাধা দেন। আবার অন্য পক্ষ বলছে, ট্রলি থামিয়ে তাঁরা চাঁদা দাবি করেছেন। তাঁরা সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবেন। কমিটি প্রতিবেদন দেওয়ার পর এ বিষয়ে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ সাদিক বলেন, চাঁদাবাজির অভিযোগে থানায় এজাহারের পর তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁরা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী কি না, তা তাঁর জানা নেই। আজ দুপুরে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।