চাকরি হারাচ্ছেন জয়পুরহাটের ১১ শিক্ষক, ৮৮ লাখ টাকা ফেরতের নির্দেশ

জয়পুরহাট প্রতিনিধি |

জাল সনদে চাকরি নেয়ায় জয়পুরহাটের নয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১১ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার নি‌র্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তাদের মধ্যে ছয়জন শিক্ষককে ফেরত দিতে হবে ৮৭ লাখ ৯৯ হাজার টাকা।  

সম্প্রতি সারাদেশের ৬৭৮ জন জাল সনদধারী শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে জয়পুরহাটের ১১ জন শিক্ষক রয়েছেন। ১১ জন শিক্ষকের ছয়জন শিক্ষক এমপিওভুক্ত হ‌য়ে নিয়মিত বেতন-ভাতা পেয়ে আসছেন। আর অন্য পাঁচজন ননএমপিও। তারা কোনো সরকারি আর্থিক সুবিধা পাননি।

জাল সনদে এমপিওভুক্ত হওয়া শিক্ষকরা বেতন বাবদ সরকারি তহবিল থেকে অবৈধভাবে টাকা নিয়েছেন। তাদের অবৈধভাবে নেয়া বেতন সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া, যারা অবসরে গেছেন, তাদের অবসর সুবিধা বাতিল করা, স্বেচ্ছায় অবসরে যাওয়া শিক্ষক-কর্মচারীদের আপত্তির টাকা প্রধান শিক্ষক বা অধ্যক্ষের মাধ্যমে আদায় করা, জাল সনদধারীদের নিয়োগ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে বলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ।

জেলার এম‌পিওভুক্ত যে শিক্ষক‌দের টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হ‌য়ে‌ছে তা‌দের ম‌ধ্যে রয়েছেন- আক্কেলপুর উপজেলার পুণ্ডুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (সমাজ) রমনা পারভীন, জয়পুরহাট সদর উপজেলার পল্লীবালা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) লিপি আরা, চাঁদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) লতিফা খানম, শাহাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (শরীর চর্চা) শাহীন সুলতানা, পাঁচবিবি উপজেলার জাবেকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) নূরে জেসমিন ও কালাই উপজেলার মোসলেমগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) শিরিন আক্তার।

রমনা পারভীনকে ১০ লাখ ৪৭ হাজার ৩৪০ টাকা, লিপি আরাকে ১৭ লাখ ৩০ হাজার, লতিফা খানমকে ১৬ লাখ ৭১ হাজার ৫০ টাকা, নূরে জেসমিনকে ১৩ লাখ ৫৭ হাজার ৩৬০ টাকা, শিরিন আক্তারকে ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৮১৩ টাকা ও শাহিন সুলতানাকে ৪ লাখ ২০ হাজার ৯০৩ টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  

ননএমপিও পাঁচ জাল সনদধারী শিক্ষক হলেন- আক্কেলপুর উপজেলার জামালগঞ্জ কলেজের দর্শন বিভাগের প্রভাষক সালমা জাহান, একই প্রতিষ্ঠানের হিসাববিজ্ঞানের প্রভাষক মনিরা খাতুন, পাঁচবিবি মহিলা কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক মো. শফিকুল ইসলাম, জয়পুরহাট মহিলা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক আল আমিন রাজু এবং সদরের শাহাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) রুমানা পারভীন।

মন্ত্রণাল‌য়ের আদেশে পল্লীবালা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) লিপি আরার বগুড়ায় অবস্থিত জাতীয় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমির (নেকটার) সনদ জাল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।  

এ প্রসঙ্গে লিপি আরা বলেন, ‌সা‌র্টিফি‌কেট যাচাই করে চাকরি হয়েছে। এখনো মন্ত্রণালয়ের কোনো চিঠি পাইনি। চিঠি পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

ননএমপিও তালিকায় থাকা জয়পুরহাট মহিলা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক আল আমিন রাজু ব‌লেন, আমি প্রথমে মাস্টার রোলে যোগদান করেছিলাম। পরে কম্পিউটার অপারেটর পদে যোগদান করি। কিন্তু অডিটের সময় আমার নামে ওই পদই ছিল। তাই এমনভাবে নাম এসেছে।

এ বিষ‌য়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহা. আব্দুর রাজ্জাক ব‌লেন, জাল সনদধারী শিক্ষক‌দের বিষয়টি জেনেছি। তবে এমন নি‌র্দেশনা‌ অফি‌শিয়া‌লি এখনো আসেনি। এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি - dainik shiksha চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিবের বিরুদ্ধে মাউশির তদন্ত কমিটি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0049378871917725