অবশেষে ঢাকার বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে নিহত সাংবাদিক বৃষ্টি খাতুন পারিবারিক কবরস্থানে চাচার পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন। পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি শেষে ১১ দিন পর অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নয়, বৃষ্টি খাতুন নামেই মরদেহ ফিরে পান বাবা। ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফলের পর সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় কুষ্টিয়ার খোকসায় নিজ বাড়িতে আনা হয় বৃষ্টির মরদেহ।
জানাজা শেষে সোমবার (১১ মার্চ) রাত ১০টায় বনগ্রাম পশ্চিমপাড়ায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারীদের ও হোটেল মালিকের শাস্তি দাবি করেছেন স্বজনরা।
মরদেহ আসছে এমন খবরে গতকাল সোমবার সন্ধ্যা থেকেই বৃষ্টির বাড়িতে ভিড় করেন স্বজন ও এলাকাবাসী। রাতে সাড়ে ৮টায় সাংবাদিক বৃষ্টি খাতুনের লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স এসে পৌঁছায় তার নিজ বাড়িতে। এ সময় সেখানে এক হৃদয় বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। নিজেদের সামনে বেড়ে ওঠা বৃষ্টির পরিচয় নিয়ে বিতর্কে ক্ষুব্ধ প্রতিবেশীরা। তবে দীর্ঘ ১১ দিন পরে মরদেহ ফিরে পেয়ে ও জন্মস্থানে দাফন করতে পেরে স্বস্তিতে স্বজন ও স্থানীয়রা।
তখনও বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন বৃষ্টির মা বিউটি খাতুন। তার আহাজারি থামানো যায়নি।
বলছিলেন, বৃষ্টির মতো ভাগ্য যেন আর কারও না হয়। আর সন্তানের মরদেহের জন্য ১১ দিন হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে পাগল প্রায় বৃষ্টির বাবা সবুজ শেখ বেইলি রোডের হোটেল মালিকের বিচার দাবি করেছেন।
তিনি বলেন, সেখানে কোনো নিয়ম মানা হয়নি। আগুন নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। কিছু ঘটলে দ্রুত নেমে বাইরে যাওয়ারও ব্যবস্থা সেখানে নেই। তার মেয়ে ধোঁয়ায় দম বন্ধ হয়ে মারা গেলেও বাইরে বের হতে পারেননি।
বৃষ্টির পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন। মরদেহ আসা এবং জানাজা ও দাফন শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন ছিল।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বলেন, বৃষ্টির বাবার সঙ্গে কথা বলেই পরবর্তীতে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত হন সাংবাদিক বৃষ্টি খাতুন। তবে বৃষ্টি নিজেকে অভিশ্রুতি শাস্ত্রি নামে পরিচয় দিতো এমন অভিযোগে ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হলে ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়।