গাজীপুরের কালিয়াকৈরে প্রাইম ইউনিভার্সিটির ছাত্র রিয়াদ হোসেন (২১) হত্যার পেছনে রয়েছে চাচির সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের সন্দেহ। এ নিয়ে তার চাচা মো. নাঈম হোসেনের (৩৪) হাতে তিনি খুন হয়েছেন বলে জানিয়েছে র্যাব।
এ ঘটনায় গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানার মাদনপুর এলাকা থেকে মো. নাঈম হোসেনকে (৩৪) গ্রেফতার করা হয়েছে।
রোববার (১৮ জুন) দুপুর ১২টায় রাজধানীর উত্তরায় র্যাব-১ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মুহাম্মদ মোসতাক আহমদ।
তিনি বলেন, ১৬ জুন রাতে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানার রতনপুর ধোপাচালা এলাকার বনের ভেতর ফাঁকা জায়গা থেকে একটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ১২ জুন তিনি নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় গতকাল (শনিবার) রাতে র্যাব-১ একটি অভিযানে নাঈম হোসেনকে গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, নিহত রিয়াদ এবং নাঈম দিনাজপুরের ফুলবাড়ী থানার পশ্চিম নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং দূর সম্পর্কের চাচা। নাঈম ২০১৯-২০২১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সৌদি আরব থাকাকালে তার স্ত্রীকে দেখাশোনা করেন রিয়াদ। এসময় তাদের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক হয় বলে চাচা নাঈম হোসেন সন্দেহ করেন। ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসে তিনি বাংলাদেশে চলে আসেন। নাঈম নিহত রিয়াদের নিকটাত্মীয়দের এটি জানান এবং প্রতিহিংসার জেরে হত্যার জন্য মনস্থির করেন। রিয়াদকে হত্যার জন্য পলাশ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে ৫০ হাজার টাকায় চুক্তি করে টাকাও দেন।
২০২২ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে দিনাজপুর থেকে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বাসাভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। এরপর চলতি বছরের মার্চ মাসে রিয়াদকে হত্যার জন্য তার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে যোগাযোগ করে। বিভিন্ন সময়ে হত্যার করার জন্য পলাশকে চাপ দিতে থাকে। গত ১৩ জুন পলাশ ও গ্রেফতার নাঈম হোসেন রিয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার মেস থেকে গাজীপুর, মৌচাক এলাকায় নিয়ে আসে। তারা রিয়াদকে চা খাওয়ানোর পর কিছু সময় তাকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করে। সন্ধ্যায় নাঈম তার ভাড়া নেওয়া পুকুরপাড়ে নিয়ে পলাশকে হত্যা করার জন্য বলে। পলাশ অনীহা প্রকাশ করলে নাঈম নিজেই হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়।
র্যাব জানায়, নাঈম কৌশলে রিয়াদের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে সব তথ্য মুছে দেয় এবং আগের ঘটনা নিয়ে কথাকাটাকাটি শুরু করে। পরে রাত পৌনে ২টার দিকে রিয়াদকে সঙ্গে নিয়ে কালিয়াকৈরের রতনপুর ধোপাচালা এলাকার বনের ভেতর চলে যায়। সেখানে গিয়ে নাঈম তার পরিহিত টি-শার্ট খুলে রিয়াদের গলায় ফাঁস লাগিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
গ্রেফতার আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানায় র্যাব।