চার ছাত্রকে মারধর : চমেকে সহপাঠীদের ক্লাস বর্জন

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি |

শিবিরকর্মী সন্দেহে চার শিক্ষার্থীকে পেটানোর ঘটনায় চট্টগ্রাম মেডিক্যালে কলেজের সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল শনিবার সকাল থেকে ৬২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করেছেন। পাশাপাশি ‘ন্যক্কারজনক’ এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করেছেন তারা।

এদিকে চার শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে চমেক-এর ‘অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিটি’। গতকাল দুপুরে শিক্ষকদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিশ্চিত করে অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার বলেন, ‘‘চার শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় নতুন করে কোনো তদন্ত কমিটি গঠনের প্রয়োজন নেই। এ বিষয়ে আমাদের ৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি আগে থেকে গঠন করা আছে। যার নাম ‘অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিটি’। কমিটির প্রধান হলেন প্রফেসর হাফিজুল ইসলাম। কমিটিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।’’

প্রফেসর হাফিজুল ইসলাম জানান, তিনি এখন চট্টগ্রামের বাইরে আছেন। ফিরবেন সোমবার। সেদিন থেকে তিনি ঘটনার তদন্ত কার্যক্রম পুরোপুরি শুরু করবেন। আহত ছাত্র এবং তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলবেন।

এর আগে দুপুরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ঘটনাটি নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষকের মতামত নেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করে অধ্যক্ষ সাহেনা আক্তারের ব্যক্তিগত সহকারী ইউছুপ মাহমুদ জানান, অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিটি গতকাল প্রাথমিক বৈঠকও করে ফেলেছে। নির্যাতনের শিকার ছাত্ররা মুখ না খুললেও কারা তাদের মারধর করেছে সে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করবে কমিটি।

এক প্রশ্নের উত্তরে চমেক অধ্যক্ষ সাহেনা আক্তার বলেন, ‘তদন্ত ছাড়া তো আমরা বিনাদোষে কাউকে শাস্তি দিতে পারি না। তাছাড়া মারধরের শিকার ছাত্ররাও মুখ খুলছে না। তবু এ ঘটনায় যারা জড়িত তাদের ছাড় দিতে পারি না।’

এ বিষয়ে নগর পুলিশ কর্মকর্তারা বরাবরই বলছেন, ঘটনার শিকার ছাত্ররা বা চমেক কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে লিখিত কোনো অভিযোগ না দিলে তাদের কিছুই করার নেই।

নাম প্রকাশ না করে চমেক ছাত্রাবাসের একাধিক শিক্ষার্থী চার শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্তদের নাম জানিয়েছেন। তারা হলেন- ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় সাড়ে তিন বছরের জন্য বহিষ্কৃত ৬০তম ব্যাচের অভিজিৎ দাশ, দুই বছরের জন্য বহিষ্কৃত ৫৯তম ব্যাচের রিয়াজুল ইসলাম জয়, এক বছরের জন্য বহিষ্কৃত জাকির হোসাইন সায়েম ও মাহিন আহমেদ। এরমধ্যে অভিজিৎ ও জয়ের বহিষ্কারাদেশ এখনো বহাল রয়েছে।

৬২তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ছাত্রলীগের ছেলেরা হল থেকে ধরে নিয়ে চার শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে। এভাবে তো শিক্ষার পরিবেশ থাকবে না। এটা বুয়েটের মতো আরেকটা আবরার কাণ্ড হতে পারত। আমরা আমাদের সহপাঠীদের অন্যায়ভাবে মারধরের প্রতিবাদ ও ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে ক্লাস বর্জন করেছি।’

গত বুধবার দিবাগত রাতে চমেক ছাত্রাবাসের বিভিন্ন কক্ষ থেকে ডেকে এনে শিবির করার অভিযোগ তুলে চার শিক্ষার্থীকে বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত চোখ বেঁধে হকিস্টিক, লোহার রড দিয়ে পেটায় ছাত্রলীগের ১০/১২জন নেতাকর্মী।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
আগের নিয়মে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রন্থাগারিক নিয়োগের দাবি - dainik shiksha আগের নিয়মে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রন্থাগারিক নিয়োগের দাবি শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ - dainik shiksha শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ মাদকের গডফাদারদের ধরার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার - dainik shiksha মাদকের গডফাদারদের ধরার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার শিক্ষা প্রশাসনে বদলি আতঙ্কে নাহিদ-দীপু সিন্ডিকেটের ৯২ কর্মকর্তা - dainik shiksha শিক্ষা প্রশাসনে বদলি আতঙ্কে নাহিদ-দীপু সিন্ডিকেটের ৯২ কর্মকর্তা দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! - dainik shiksha দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষের হাতাহাতি, সভা পণ্ড - dainik shiksha বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষের হাতাহাতি, সভা পণ্ড শিক্ষকদের বদলির বিষয়ে সর্বশেষ - dainik shiksha শিক্ষকদের বদলির বিষয়ে সর্বশেষ অগ্রসর সমাজ তৈরির লক্ষ্যই বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন - dainik shiksha অগ্রসর সমাজ তৈরির লক্ষ্যই বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025959014892578