কুড়িগ্রামের চিলমারীতে চিলমারী সিনিয়র আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মো. নাজমুল হকের অভিজ্ঞতা ও চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা পূরণ না হলেও গভর্ণিংবডি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তাকে নিয়োগ দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অপরদিকে, বিষয়টিকে আড়াল করতে প্রায় ৭ মাস যাবৎ একই প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. আনোয়ারুল ইসলামকে প্রাণনাশের হুমকি ও বিভিন্ন পরিকল্পনা করে ব্যর্থ হওয়ায় অবশেষে নিজেকে বাঁচাতে উদ্দেশ্যপ্রনোদিতভাবে অধ্যক্ষ সাময়িক বরখাস্ত করেন। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের উপজেলার চিলমারী সিনিয়র আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষের শূন্যপদ পূরণে গত ২৩ জুলাই ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে গভর্ণিংবডি দরখাস্ত আহ্বান করা হয়। এই পদে মোট ১১ জন প্রার্থী আবেদন করেন। যাচাই-বাছাই কমিটি কর্তৃক ১১ জন প্রার্থীকে বৈধ প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে তালিকা ভুক্ত করা হয়।
গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার নাজিমাবাদ দাখিল মাদরাসা (আলিম স্তরে উন্নীত) থেকে আবেদনকারী মো. নাজমুল হকের এই প্রতিষ্ঠানে সুপার পদে ১ বছর ৮ মাস ও আলিম স্তরে প্রতিষ্ঠানটি উন্নীত হওয়ায় সুপার পদ থেকে সমন্বিত হওয়া অধ্যক্ষ পদে ১১ মাসের অভিজ্ঞতা নিয়ে কাঙ্ক্ষিত অভিজ্ঞতা পূরণ না হওয়া সত্ত্বেও তার আবেদন যাচাই-বাছাই কমিটি বৈধতা পাওয়ায় বাকি ১০ জন বৈধ প্রার্থীর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
বিষয়টি নিয়োগ কমিটির কর্ণগোচর হওয়ায় তারা নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে সন্ধিহান হয়ে পড়েন। কিন্তু অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোস্তাফিজুর রহমান গভর্নিং বডিকে ম্যানেজ করে একেবারেই শেষ সময়ে গত ২০ জানুয়ারি নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হয়। এতে নাজমুল হককে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ প্রদান করেন। অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ কমিটি নাজমুল হককে নিয়োগ দেবে জানতে পেরে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেননি আবেদনকারী অনেকেই।
এ ব্যাপারে নাজমুল হক দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, আমি বিধি মোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছি ও কাঙ্ক্ষিত অভিজ্ঞতা পূরণ না হওয়ায় আমি ভাইস প্রিন্সিপাল পদের বেতন নিচ্ছি।
অপরদিকে অফিস সহকারী আনোয়ারুল ইসলাম শুরু থেকে বিষয়গুলো নিয়ে গভর্নিং বডিকে অবগত করায় নাজমুল হক তার ওপর ক্ষিপ্ত হন এবং তাকে নাজেহালের জন্য সুযোগ খুঁজতে থাকেন। একপর্যায়ে অফিস সহকারীকে সাময়িক বরখাস্ত করেন অধ্যক্ষ। এ বিষয়টি জানাজানি হলে অভিভাবক ও স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আমি মাদরাসা সংশ্লিষ্ট অনিয়মের বিষয়ে কথা বলায় অধ্যক্ষ আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বরখাস্ত করেছেন।
চিলমারী সিনিয়র আলিম মাদরাসার ভাইস প্রিন্সিপাল ও নিয়োগ বোডের সদস্যসচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, প্রার্থীদের কাগজপত্র ডিজিতে পাঠানো হয়। তারপর যাচাই-বাছাই করে নিয়োগ বোর্ড করা হয়। বিধি মোতাবেক অধ্যক্ষ নিয়োগ দেয়া হয়েছে। টাকার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।