দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আজ চুয়াডাঙ্গায়। আজ শনিবার সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গার হাটকালুগঞ্জে অবস্থিত আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে। এটি আগের দিনের তুলনায় দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম। আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি মৌসুমে এটিই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
চুয়াডাঙ্গা সরকারি ছাগল খামারের কাছে আজ সকাল আটটার দিকে বাঁশের লাঠিতে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন ৭৫ বছর বয়সী গিয়াস উদ্দিন। শীতের সকালে ঘর ছেড়ে রাস্তায় কেন, প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, ‘জাড় নাগজে, তাই নোদি দাঁড়ি নইচি।’
একই এলাকায় তিনজন নারী তিনটি ছাগল নিয়ে রোদ পোহাচ্ছিলেন। বৃদ্ধা আরেসা বেগম বলেন, ‘গ্যালো কদিন ধইরে শীতির ঠেলায় হাঁড় কাইপে যাচ্চে।’ পাশেই দাঁড়িয়ে তাঁর মেয়ে কহিনূর বেগম বলেন, ‘১০ বচরেরও বেশি সুমায় ধইরে ছাগল ফারাম পাড়ায় থাকি। প্রতিবারই শুনি সরকার থেইকে কোম্বল, ইডা-উডা দ্যায়। আমাদের কপালে জোটে না।’ কহিনূরের বক্তব্য সমর্থন করেন পাশে দাঁড়িয়ে রোদ পোহানো মাজেদা খাতুন।
টানা এক সপ্তাহ ধরে প্রতিদিনই তাপমাত্রা কমে আসছে। তাপমাত্রা কমের পাশাপাশি উত্তর থেকে ধেয়ে আসা হিমেল হাওয়ায় সীমান্ত জেলা চুয়াডাঙ্গাতেও শীত জেঁকে বসেছে। খেটে খাওয়া মানুষেরা পড়েছেন বিপাকে। হঠাৎ চলে আসা ঠান্ডার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ। গত কয়েক দিন ধরে ঘন কুয়াশার কারণে যানবাহনকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। দূরপাল্লার যানবাহনের চালকেরা বলেন, এ কারণে গন্তব্যে পৌঁছাতে তাঁদের বাড়তি সময় লাগছে।
আজ শনিবার সকালে চুয়াডাঙ্গা শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে লোক চলাচল বেশ কম ছিল। সাধারণত সকাল থেকে দোকানপাট খুললেও আজ সকাল সাড়ে নয়টা পর্যন্ত বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ ছিল। পরিবহন কাউন্টারগুলোতে মানুষের ভিড় চোখে পড়েনি।
বড় বাজার এলাকায় কথা হয় নৈশ প্রহরী রেজাউল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘গ্যালো চাইর-পাঁচ দিন ধইরে যেভাবে জাড় লাগজে তাতে রাতির বেলা ডিউটি করাই মুশকিল হয়ে পড়চে। সারা রাত আগুন জ্বালি থাকতি হচ্চে। এভাবে বেশি দিন চললি টিকে থাকাই বিপদ হয়ে যাবেনে।’
চুয়াডাঙ্গার আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল হাসান বলেন, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কাছাকাছি হওয়ায় এবং উত্তরের হিমেল হাওয়ার কারণে শীতের তীব্রতা বাড়ছে। এই অবস্থা আরও কয়েক দিন চলতে পারে।