দৈনিকশিক্ষাডটকম ডেস্ক : রোমাঞ্চের শুরুটা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) প্রথম ম্যাচ থেকেই পাওয়া শুরু করেছেন সমর্থকেরা। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ও দুর্দান্ত ঢাকার উদ্বোধনী ম্যাচের ফলই নির্ধারণ হলো শেষ ওভারে গিয়ে। ওভারের তৃতীয় বলে পয়েন্টের ওপর দিয়ে মোস্তাফিজুর রহমানকে দারুণ এক ছক্কা মেরে ঢাকার ৫ উইকেটের জয় নিশ্চিত করেছেন চতুরাঙ্গা ডি সিলভা।
বাংলাদেশ দলের হয়ে সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হলেও মোহাম্মদ নাইম ঘরোয়া লিগে সব সময়ই উজ্জ্বল। বিপিএলেও শুরুটা করলেন রঙিন। দারুণ এক ফিফটি করে দুর্দান্ত ঢাকার জয়ে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। আরেক ওপেনার দানুশকা গুনাতিলাকার সঙ্গে গড়েছেন শতরানের জুটি।
শেষ দিকে ইরফান শুক্কুর খেলেছেন কার্যকর এক ইনিংস। যার কল্যাণে কুমিল্লার দেওয়া ১৪৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করে ঢাকা। কিন্তু ম্যাচের শুরু বিবেচনায় বেশ সহজ জয় পাওয়ার কথা ছিল তাদের। নাঈম-গুনাতিলাকা ওপেনিং জুটিতে ১২.৪ ওভারে তোলেন ১০১ রান।
৪০ বলে ৩টি করে ছক্কা ও চারে ৫২ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে তানভীর ইসলামের শিকার হন নাঈম। তখন জেতার জন্য ঢাকার তাঁদের প্রয়োজন ছিল ৪৪ বলে ৪৯ রান। হাতে ছিল ৯টি উইকেট। তবে আঁটসাঁট বোলিংয়ে এমনও ম্যাচ কঠিন করে তোলেন কুমিল্লা বোলাররা। ম্যাচ নিয়ে যান শেষ ওভার পর্যন্ত।
এরপর গুনাতিলাকাকেও (৪১) ফেরান তানভীর। তিন নম্বরে নেমে লাসিথ ক্রসপুলেকে (৫) ফিরিয়ে ঢাকাকে আরও চাপে ফেলে দেন মোস্তাফিজ। শেষ দুই ওভারে ঢাকার দরকার ছিল ১৩ রান। ১৯ তম ওভারে সাইফ হাসানকে (৭) বোল্ড করে ম্যাচ আরও জমিয়ে তোলেন খুশদিল শাহ। তবে ওভারটির শেষ বলে ছক্কা মেরে ম্যাচ আবার ঢাকার নিয়ন্ত্রণে আনেন শুক্কুর। ২ ছক্কায় ১৬ বরে ২৪ রানের কার্যকর এক ইনিংস খেলেছেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।
তার আড়ে ইমরুল কায়েসের ফিফটি ও তাওহীদ হৃদয়ের ৪০ ফেরেনো ইনিংসের সৌজন্যে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৪৩ রান করেছিল কুমিল্লা। ইনিংসের ১৮ ওভার পর্যন্ত তাদের উইকেটে পড়েছিল মাত্র ১ টি। হাতে ৯টি উইকেট থাকার পরও সেভাবে ঝড় তুলতে পারেননি ব্যাটাররা।
মিরপুরের উইকেটও ছিল ভালো। বল গতি ও বাউন্স দুটোই ছিল। কিন্তু উইকেটের সহায়তা কাজে লাগাতে পারলেন কই বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার ব্যাটাররা। শুরু থেকেই কুমিল্লার ব্যাটারদের চেপে ধরে বোলিং করেন ঢাকার বোলাররা। প্রথম ওভারে তাসকিন আহমেদ দিয়েছেন ৪ রান। দ্বিতীয় ওভারে শরীফুল দেন ২ আর তৃতীয় ওভারে আরাফাত সানি দিয়েছেন ৩ রান। চতুর্থ ওভারে গিয়ে প্রথম বাউন্ডারি পায় কুমিল্লা।
চতুরাঙ্গাকে প্রথম বলে মিডউইকেট দিয়ে দারুণ এক ছক্কা মারেন লিটন দাস। ওভারের চতুর্থ বলে আরেকটি চার মারেন তিনি, এরপরই ঘটে বিপর্যয়। স্পিনার চতুরাঙ্গার স্লটের অফ-স্ট্যাম্পের বাইরের বল মারতে গিয়ে পয়েন্টে মোহাম্মদ নাইমের হাতে ধরা পড়েন লিটন। ১৬ বলে ১৩ রানে ফেরেন কুমিল্লার অধিনায়ক।
২৩ রানে প্রথম উইকেট পড়ার পর দ্বিতীয় উইকেটে ইমরুল-হৃদয় উইকেটে থিতু হন। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে দুজনে কুমিল্লার স্কোরে যোগ করেন ১০৭ রান। এর জন্য তাঁরা মিলে খেলেছেন ৮৭টি বল। পরের ব্যাটাররা যথেষ্ট বলও পাননি ঝড় তোলার। বিপরীতে শেষ দুই ওভারে তাসকিন আহমেদ ও শরীফুল ইসলামে তোপ দাগানো বোলিংয়ে কুমিল্লা হারায় ৫ উইকেট। শেষ ওভারের তিন বলে হ্যাটট্রিক করেন শরীফুল।
ইনিংসের শেষ তিন বলে খুশদিল শাহ, রোস্টন চেজ ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে ফেরান শরীফুল। তাতে বিপিএলের ৭ম হ্যাটট্রিক লেখা হলো বাঁহাতি পেসারের নামে।
তবে কেউই সেভাবে ঝড় তুলতে পারেননি। ১৯ তম ওভারে হৃদয় ও ইমরুকে ফেরান তাসকিন। ৪১ বলে ৪৭ রান করেছেন হৃদয়। ইনিংসে ছিল ২টি ছক্কা ও একটি চারের বাউন্ডারি। ৫৬ বলে ৬৬ রানে ফেরেন ইমরুল। ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় ছিল এই বাঁহাতি ব্যাটারের ইনিংসটি। শেষ দিকে ৫ বলে ২ ছক্কায় ১৩ রান করেছেন খুশদিল। ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে শরীফুল ৩টি ও তাসকিন ৩০ রান দিয়ে শিকার করেছেন ২টি উইকেট।